অনেকেই প্রশ্ন করে যে, ফলস হোপ সিনড্রোম বলে কি অদৌ কোনো কিছু আছে ? উত্তর হলো হ্যা আছে ।

ফলস হোপ সিন্ড্রোমের স্ব-পরিবর্তন, অবাস্তব লক্ষ্য-নির্ধারন এবং দূর্বল মোকাবেলা দক্ষতার অপ্রয়োজনীয় মূল্যায়নের ফলাফল । এটি নিজের মধ্যে পরিবর্তন আনতে সফল হয় না এমন অনেকের মধ্যে আত্ন-সম্মান  হ্রাস এবং মেজাজের অবনতি ঘটাতে অবদান রাখে।

ফলস হোপ সিনড্রোম বলতে নিজের ইচ্ছার বা কল্পনার উপর ভিত্তি করে অযৌক্তিক আশা তৈরি করার প্রবণতা বোঝায়, একই বিষয়ে পূর্বের ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও।

ফলস হোপ সিনড্রোম বলতে লক্ষ্য অর্জনে বারবার চেষ্টা ও ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা বোঝায়, কারণ ব্যক্তিটি অযৌক্তিক বেশি ভাবে নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন।

বারবার ব্যর্থতা চারটি কারণে হতে পারে। প্রথমত পরিমাণগত। যতটা অর্জন করা সম্ভব তার চেয়ে অস্বাভাবিক বেশি পরিমাণে লক্ষ্য নির্ধারণ করা। যেমন এক মাসে হয়ত ৬ কেজি ওজন কমানো সম্ভব। ফলস হোপ সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তি হয়ত ১৫ কেজি ওজন কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করবেন এবং ব্যর্থ হবেন।

ব্যর্থতার দ্বিতীয় কারণ হতে পারে সময় সংক্রান্ত। এক্ষেত্রে যতটা সময়ে লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব ব্যক্তিটি মনে করে তার চেয়ে কম সময়ে সে এটি করতে পারবে।

হয়ত ভালভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ১৫ দিন সময় প্রয়োজন, কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যক্তিটি মনে করে একরাত পরেই তা সম্ভব যদিও আগে কখনো তা সে করতে পারেনি।

ব্যর্থতার তৃতীয় দিকটি আসে কত সহজে লক্ষ্য অর্জন করা যায় এই সংক্রান্ত ভুল ধারনা থেকে। সিক্স প্যাক করতে যতটা চেষ্টার দরকার এই ফলস হোপ সিনড্রোম আক্রান্ত ব্যক্তি হয়ত মনে করে তার চেয়ে কম চেষ্টায় সে তা অর্জন করতে পারবে এবং ব্যর্থ হয়।

মিলিতো ইস্যুঃ টেলিপ্যাথি কী? টেলিপ্যাথি’র মাধ্যমে কীভাবে যোগাযোগ হয়ে থাকে?

যে প্রশ্ন করে মানুষের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারি?

সর্বশেষ ব্যর্থতা আসে ফলাফলগত দিক থেকে। কোন কিছু অর্জনের পরে তার ইমপ্যাক্ট কতটা হবে তার সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণার অভাব থেকে।

যেমন একজন মনে করতে পারে ওজন কমালেই হয়ত তাকে লোকে বেশি পছন্দ করবে, চাকরিতে উন্নতি হবে ইত্যাদি। কিন্তু বাস্তবে হয়ত দেখা যাবে ওজনের সাথে লোকের পছন্দ-অপছন্দের কোন সম্পর্ক নেই।

ফলস হোপ সিনড্রোম কে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের সাথে সম্পর্কযুক্ত মনে করা হয়। এটা ধূমপায়ী, মাদকাসক্ত ব্যক্তি, যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, জুয়াড়ি এবং টিন এজারদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।

এই সিনড্রোমকে মস্তিষ্কের ডোপামিন লেভেল এর সাথে সম্পর্কিত ধরা হয়।

ফলস হোপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে হতাশা এবং বিষণ্ণতার পরিমাণ বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে তারা যখন বারবার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হন অযৌক্তিকভাবে বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করার ফলে। যৌক্তিক লক্ষ্য অর্জনের দিকে মনোযোগ দিলে অবশ্যই ব্যর্থতার পরিমাণ কমবে।

আসুন কিছু উপায় দেখে নেই ,যেগুলো আপনাকে সফল হতে সাহায্য করবে।

১ঃ নিজেকে সময় দিয়া বোঝার চেষ্টা করুন , নিজের ভালো খারাপ দিক।। ভালটাকে আরো ভালো করে উপস্থাপনের চেষ্টা করুন এবং খারাপ টা শুধরে নিন।

২ঃ মানুষের কথা শুনুন । মানুষ সেই ব্যক্তিত্বই পছন্দ করে যিনি তার কথা শুনতে রাজি থাকেন। মানুষের বক্তব্য শুনে বুঝুন তার প্রকৃতি , মানসিকতা।

৩ঃ কম কথা বলুন। অল্প কথায় বক্তব্য সারুন ।

৪ঃ সাধারণ পোশাক পরিধান করুন। এতে আকর্ষণীয় হবেন মহলে।

৫ঃ হিংসা , রাগ পরিত্যক্ত করুন।

৬ঃ মানুষকে ভালোবাসুন। সমাজে মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করে যান।এতে মনে আলাদা প্রশান্তি আসবে।

৭ঃ নিজের জীবন সুন্দর করে গড়ে তুলুন।

৮ঃ নিজের ব্যর্থতার জন্য অন্যকে না বরং নিজের ভুল দেখুন।

৯ঃ ক্ষমা করতে শিখুন। (যদিও সব ভুলের ক্ষমা করা যায়না ) ক্ষমা করে দেওয়ার মতো শক্তিশালী মানসিকতার ব্যক্তি হয়ে উঠুন।

১০ঃ চায়ের দোকানে বা পাড়ায় মোড়ে গিয়া সমাজকে দোষারোপ না সমাজের একজন হইয়া সমাজকে সুস্থ, সুন্দর করে তোলার চেষ্টা করুন।.

ধন্যবাদ.

%d bloggers like this: