কিভাবে চালাক চতুর হওয়া যায়? বুদ্ধিমান হওয়ার উপায়

স্মার্ট বা চালাক চতুর হওয়া কখনোই প্রাকৃতিক ব্যপার না। এটা শেখার মত কিছু ব্যাপার। চটপটে ও বুদ্ধিমান কিংবা চালাক চতুর হওয়ার পেছনে অনেক কিছুই জুড়ে থাকে। সেসব নিয়েও কিছু ধারনা দেয়া হবে।

বুদ্ধিমান চালাক চতুর সম্পর্কে কিছু সামাজিক ধারনা তুলে ধরি:

সমাজের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষেরা নানান ধরনের চালাক চতুর হবার প্রমান দেয়। যেমন দোকানদার তার পন্যের মধ্যে খারাপ পন্য মিশিয়ে ক্রেতাসাধারনকে বোকা বানায়। নিজেকে বানায় চালাক চতুর। আমরা একে ঘৃন্য চোখে দেখছি। এটা নিচক চালাকী। ধূর্ত প্রভাব। কিছু ক্রেতাও আবার দোকানীকে বোকা বানায়। নিজে চালাক সাজেন।
কখনো কখনো অসহায় মানুষদের বলা হয় বোকা। চালাক ভাবা হয় শুধু ধনীদের। টাকার মাপকাঠিতে চালাক চতুরের পরিমাপ হয়। সমাজের উর্ধতন লোকেরা নিজেদের চালাক চতুর ভাবেন। আর নিম্নশ্রেনীর লোকেদের ভাবেন বোকা। এসব অনেক আগের হিসেব নিকেশ।
ইদানীং সমাজ অনেকটা বদলেছে। কিছুটা বোঝার চেষ্টা করছে কৌশল বা প্রকৌশল প্রয়োগ করাও চালাক চতুর হবার আরেক উপায়। তাই এদিকে আজকাল বেশি নজর। স্মার্টনেস হতে গেলে চালাক চতুর হতে হয়।

কৌশল প্রয়োগ করে কিভাবে বুদ্ধিমান চালাক চতুর হওয়া যায়?

প্রকৌশল আর প্রোএক্টিভ কথাটার মাঝে অনেক মিল আছে। বোকারা কাজ করেন রি-এক্টিভ পদ্ধতিতে। চালাক চতুর যারা কাজ করেন কাজ আসার আগেই খোঁজ খবর থাকে। নিজেই কাজটা নিয়ে ভাবেন বেশি। যেহেতু মানব জীবনের সবকিছু কাজ নির্ভর। আপনি কাজ করলেই আপনার গুন বা দোষ প্রকাশ পায় সেক্ষেত্রে কাজে কৌশলী হওয়া আবশ্যক। প্রকৌশল হচ্ছে কারিগরি জ্ঞান। যে কাজ করবেন তার খুঁটিনাটি প্রয়োগ পদ্ধতি সর্বশেষ বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে করা উচিত। তবেই বাস্তবিকভাবে কৌশলী হতে পারবেন। জ্ঞান চর্চা করা সব মানুষেরই চালাক চতুর হবার প্রথম এবং প্রধান উপায়। জ্ঞান হতে পারে যে কোন বিষয়ের।

বুদ্ধিমান চালাক চতুর হওয়ার উপায়

 

সক্রিয় এবং সজাগ থেকে চালাক চতুর হওয়া যায়
শুধুমাত্র বাংলাদেশের মত দেশে কারিগরি বা বিস্তারিত কাজের জ্ঞান না থাকলেও চালাক চতুর হওয়া যায়। এক্ষেত্রে আপনাকে সজাগ আর সক্রিয় থাকতে হবে। কান চোখ বেশি খোলা রাখা যাকে বলে। সব শুনতে হবে, সব দেখতে হবে। বলাটা প্রয়োজন মাফিক। কাজ না জেনেও কেন এই গুন আপনাকে চালাক চতুর হিসেবে গন্য করবে? কারন বাংলাদেশে এমন লোকের অনেক অভাব। বেশিরভাগ মানুষ নিষ্ক্রিয় টাইপ। যখন যা দরকার তা-ই করে। অনেক মানুষেরই ভবিষ্যত পরিকল্পনা নেই। এটা আমি হলফ করে বলতে পারি। যদি আপনার ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম হয়, তাহলে ধরে নিচ্ছি আপনি অনেকটাই চালাক চতুর।

বুদ্ধিমান চালাক চতুর অর্জন করার বিষয়, পড়ালেখা করেও এগিয়ে নেয়া যায়

চালাক চতুর হওয়া অর্জন করার বিষয়। পড়ালেখা করেও অর্জন করতে পারেন। অনেকেই বলেন, বুদ্ধিমান বা চালাক চতুর হওয়া জেনেটিক ব্যাপার। এই বিষয়ে আমি দ্বিমত। অনেক ছেলেমেয়ে দেখেছি এতই চালাক যে তার বাবা মা তার ধারে কাছে তো দূরে থাক পাড়ায় নেই।
আবার অন্যদিকে অনেক চালাক বাবা মায়ের ছেলেমেয়েরা এতই অথর্ব যে ভাবাই যায় না কি করে হলো? এর মানে একটাই-চালাক চতুর হতে গেলে জেনেটিক বা বংশ পরষ্পরা তেমন কোন প্রভাব ফেলে না। পরিবেশ কিংবা স্বাস্থ্য কিছুটা দ্বায়ী। কিন্তু স্টিফেন হকিং এর দিকে তাকান। শারিরীক অবস্থার কথাও ভুলে যাবেন।

বই পড়া মানুষকে কিভাবে চালাক চতুর হতে সাহায্য করে

কিভাবে চালাক চতুর হওয়া যায় জানতে হলে বইয়ের দিকে খেয়াল করুন। প্রচুর বই পড়া মানুষকে চালাক চতুর হতে সাহায্য করে। বিখ্যাত চালাক চতুর মানুষদের জীবনী গ্রন্থ পরে দেখতে পারেন। এই বিষয়ে বিশ্বের ১০০শ্রেষ্ঠ মনীষির জীবনি বইটি পড়লে আপনার ধারনা বদলে যেতে পারে। না পড়ে কেউই মনীষী হননি। মহামানবদের কথা বাদ থাকবে কেন? তাঁরা পরিবেশকে পড়েছেন, পর্যবেক্ষন করেছেন। তাঁরা সাধনা করেছেন। বই পড়ার অভ্যাস যাদের আছে তারা অনেক কিছু বোঝেন অন্যদের চাইতে।

শরীর চর্চা বা খেলাধুলা কিভাবে চালাক চতুর হতে সাহায্য করে?

মস্তিষ্ক দ্রুত পরিচালনার জন্য দরকার সুস্থ্য শরীর। এজন্য ব্যায়াম খেলাধুলা দরকার। অকেজো শরীর যা নিয়তই পেইন দেয় তার ভেতর দিয়ে ভাল বুদ্ধির চর্চা করা খুবই দুরুহ।

কিভাবে চালাক চতুর হওয়া যায়

এছাড়াও কিভাবে চালাক চতুর হওয়া যায় বিভিন্ন সোর্স অনুসরন করে-
চালাক চতুর হতে গেলে অনেক বিষয়ের উপর লেখা বই কিংবা ডকুমেন্টারি ভিডিও, মুভি বা চলচ্ছিত্র দেখা যেতে পারে। ম্যাগাজিন, প্রবন্ধ, ইত্যাদি পড়তে হয়।
খবরের কাগজ আর আশেপাশের চলতি খবরে কান দিতে হয়। পরিবেশ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাটাও একটা অধ্যায় চালাক চতুর হবার।
চালাক চতুর হওয়া খুবই জরুরী। যা দেশের মানুষের জন্য কার্যকরী। চীনারা অনেক বেশী কৌতুহলী আর পরিশ্রমী। তারা বিশ্বে অনেক বেশি চালাকও। কারিগরি জ্ঞান আর দক্ষতা তাদের চালাকীর অন্যতম কারন। তাদের কাছ থেকে চালাক চতুর হওয়ার বেশি উপকরন পাওয়া যেতে পারে।
জাতি হিসেবে বাংলাদেশীরা অনেক বোকা টাইপ। এটা আমাদের উত্তরাধীকার সূত্রে পাওয়া। তাই শিশুর সামনে যেমন আগুন রাখলে সে সোনা মনে করে ধরতে চলে যায়। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই টাকা দেখলেই তাকে পকেটে ভরতে চায়। মাঝখানে যে চালাক চতুর হবার অনেক কারসাজি আছে তার কথা মাথায় থাকে না।
এজন্য বাংলা অভিধানে চালাক শব্দটির দুই ধরনের অর্থ আছে যা আমি প্রথমেই বলে রেখেছি। আমরা চাইব কিভাবে চালাক চতুর হওয়া যায় তার অনুশীলন করতে। কখনোই চালাক হয়ে চালাকীর জাল বিছিয়ে কারো ক্ষতি করতে নয়।

এছাড়াও কিভাবে চালাক চতুর হওয়া যায় বিভিন্ন সোর্স অনুসরন করে-

১..স্মার্টফোন কেনার সময় কখনই ক্যামেরাটা গুরুত্ব দেবেন না। প্রসেসর এবং RAM এর গুরুত্ব সর্বাধিক। স্ক্রীনসাইজ ও খুব একটা গুরুত্ব রাখেনা। মনে রাখবেন আপনি ক্যামেরা অথবা TV নয়, মোবাইল ফোন কিনছেন।
২..যখন কারো সাথে কোনো বিতর্কে অংশ নেবেন তখন পুরো সময় নিজেকে ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করুন….. ঠান্ডা মাথায় বিতর্কে জয়লাভ করার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
৩..কোন পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত মানসিক চাপের সৃষ্টি হলে চুইংগাম চিবতে পারেন; পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে।
৪..যখনই কারো সাহায্য প্রয়োজন হবে সরাসরি তাকে বলুন “আমি আপনার সাহায্য চাই”। এতে অনেক দ্রুত কাজ হয়।
৫..কোন ব্যক্তি যদি আপনাকে অপমান করে আপনি শুধু তাকে অবহেলা করুন অথবা পারলে তার নকল করুন। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই আপনি আপনার মেজাজ হারাবেন না এবং পরিস্থিতি কখনও আপনার হাতের বাইরে যেতে দেবেন না।
৬..অনলাইন থেকে কোন জিনিস কিনতে চাইলে সেই জিনিসটাকে আপনার cart এ কয়েকদিনের জন্য সেভ করে রাখুন কিন্তু অর্ডার দেবেন না। কিছুদিনের মধ্যে দেখবেন এই জিনিসটির দাম বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিছুটা কম হয়ে যাবে।
৭..কোনো নতুন জায়গায় ঘুরতে গেলে আপনি যদি ওই জায়গাটির সম্বন্ধে একটা সম্যক ধারণা চান তাহলে কোন চায়ের দোকানে চলে যান। চা খেতে খেতে এবং দোকানদারের সাথে কথা বলতে বলতে ওই জায়গার সম্বন্ধে মোটামুটি একটা ধারণা পেয়ে যাবেন।
৮..আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকে দেখুন এবং নিজের সাথে হাসতে থাকুন এবং নিজেকে বলুন “আমি নিজেকে পছন্দ করি” তাৎক্ষণিকভাবে এটি আপনার আত্মবিশ্বাস অনেক গুণ বাড়িয়ে দেবে।
৯..আপনার ঘরে একটি নীল বাতি রাখুন। এটি আপনাকে শান্ত থাকার প্রয়োজনীয় হরমোন নিঃসরণে সাহায্য করবে।
১০..আপনি যদি কোন দলের সাথে একসাথে থাকেন এবং জানতে চান কে আপনাকে সবথেকে বেশি পছন্দ করে তাহলে কোন হাসির মুহূর্তে দেখুন কোন ব্যক্তি আপনার দিকে হাস্যরত অবস্থায় তাকিয়ে রয়েছে! যখন কেউ মন খুলে হাসে তখন সে তার সবথেকে নিকট ব্যক্তির দিকেই তাকিয়ে থাকতে পছন্দ করে।
১১..যখন কেউ আপনার দিকে রাগান্বিত অবস্থায় তাকিয়ে আছে তখন শান্ত থাকার চেষ্টা করুন।
১২..দুটো সিদ্ধান্তের মধ্যে কোন একটি কে পছন্দ করতে হলে কঠিনতর সিদ্ধান্তটি গ্রহন করুন। ভবিষ্যতে আফসোস করবেন না।
১৩..ইন্টারভিউ বোর্ডে যদি কোনো অজানা প্রশ্নের মুখোমুখি হন তাহলে তিন থেকে পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে জানিয়ে দিয়েন আপনি ওই প্রশ্নের উত্তর জানেন না। কোনরকম ভনিতা করবেন না। এতে আপনার ব্যক্তিত্বের প্রভাব বৃদ্ধি পাবে।
১৪..কোন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসার এক ঘণ্টা আগে থেকে পরীক্ষার হলে ঢোকার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত আপনি ওই কোম্পানি সম্বন্ধে শুধু ভাবতে থাকুন এবং চাকরিরত অবস্থায় ওই কোম্পানিতে আপনার অবস্থানের প্রতিচ্ছবি কল্পনা করুন। পরীক্ষার সময় আপনার ইতিবাচক মানসিকতা অনেকটাই বেড়ে যাবে।

 

%d bloggers like this: