শুধু বুয়েট, মেডিকেল আর বিসিএস এর নামে কোচিং ব্যবসার মডেল বাদ দিয়ে একটু দেশ ও সমাজ ্এর দিকেও তাকান।

 সব কিছুতেই রেস চলছে! বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে! আর দেশ তাকিয়ে দেখছে? না...।
দেশও বিশ্বের সাথে তাল মেলাচ্ছে। গার্মেন্টস শিল্পে দেশ এখন এতটাই এগিয়েছে, মধ্যবিত্ত এখন এইট পাশ ছেলে-মেয়েকে নাইনে না দিয়ে, গার্মেন্টস এ দিচ্ছে।আছে কিন্তু এমন ছোট ছোট অনেক শিল্প কারখানা… শিশুশ্রমও চলছে কিন্তু! একটা ফেইক বার্থ সার্টিফিকেট জমা রাখা বলে কথা।এতে আপনাদের কোন লস নেই, আপনাদের সন্তান তো বড় জায়গায় বড় টাকায় পড়ছে। এই দেশ ও সমাজ ্এর সাথে মানিয়ে যখন নিতে পারবে না? আপনার সন্তান তখন কই যাবে ভাই? এতটা স্বার্থপর ভাবে কেন ভাবেন?
জাতিকে অনেক দিয়েছেন, এর পাপ আপনাদের কয় পুরুষে কাটিয়ে উঠতে পারবে বলতে পারব না, তবে যা কামাই করেছেন তা দিয়ে আপনাদের বেশ কয়েক পুরুষ বসে বসে খেতে পারবে।
এবার তাহলে একটু বেনিফিটের কথা বাদ দেন। আসেন দেশ ও সমাজ এর কিছু সত্যিকারের প্রয়োজনীয় শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলি।
টাউনশিপ প্ল্যানিং নিয়ে সাবজেক্ট প্রণয়ন করেন, পড়া লেখার ব্যবস্থা করেন। ম্যাস ট্রানজিট, ম্যাস পার্কিং, ম্যাস হিউম্যান ফ্লো… এগুলো নিয়ে কি ভেবে দেখেছেন? ভার্সিটি পর্যায়ে রিসার্চের ব্যবস্থা করেন।
আমাদের ছেলে-মেয়েরা করতে চায় অনেক কিছু দেশ ও সমাজ এর জন্য।
আপনারা বলেন লাগবে না- বই পড়ো, GPA আর CGPA আনো কেবল। তারপর ফ্রেশার গ্রাজুয়েট হিসেবে নিজেকে অযোগ্য ভেবে ঝরে পরো, নয়তো- না বুঝে একেকটা প্রফেশনাল মার্কেটপ্লেসের বারোটা বাজাও।
ওরই বা কী দোষ? ওর থেকে তো ফাইভ ফেল মেয়েটা গার্মেন্টসে বেশি বেতন পাচ্ছে, যে ওরই বাসায় ঝিয়ের কাজ করত! কত খুন্তির দাগ নিয়ে মেয়েটা আজ এখানে। আর আমরা আমাদের সন্তানদেরকে যোগ্যতা দিতে পারিনি।
© ছবিঃ ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ESA)
এই গল্পেও যারা বুঝতে পারছেন না যে, কেবল পড়ার রেজাল্টে কিছুই হয় না… বাস্তব জীবনে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অনেক বড় কিছু… তাদের বলব, একটু খেয়াল করেন।
বেশ কিছু বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে হাতের কাজের দক্ষ কারিগর ছেলে/মেয়েটা আগামী বছর অপারেটর সুপারভাইজার হবে।
আর আপনার ছেলেটা কেবল মাত্র অপারেটিং সিস্টেম আর MS-Office সিভিতে নিয়ে ঘুরে বেড়াবে, ইন্টারভিউ দেবে।
শুধু আরবান প্ল্যানিং কেন? উপকূলীয় অঞ্চল নিয়ে ভাবেন। সকল গবেষণার দায়িত্ব ভার্সিটির উপরে ছেড়ে দেন। তারা মিঠা পানি আর নোনা পানির জীববৈচিত্র নিয়ে কাজ করুক।
মাছ গবেষণা নিয়ে মাঠ পর্যায়ে তরুণরা কাজ করবে, তাদের প্রফেসরদের সাথে।
এক দশক পরে দেশের জনসংখ্যা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেই হুঁশ আছে? তাদের পুষ্টি যোগান দিতে আমিষের চাহিদা আপনি অস্বিকার করতে পারেন না।
যদি ভাবেন কেবল ত্রিশালের চাষের মাছ দিয়ে ভবিষ্যৎ উতরে যাবেন… তাহলে ভুল আবারো করবেন।
আমাদের কৃষি নিয়েও ভাবতে হবে। আরো উৎপাদনশীল চিন্তা আনতে হবে। কেবল গার্মেন্টস ক্ষেত্রে উন্নয়ন করেই সব হয়ে যাবে সেটাও ভুল।
জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় প্রভাব নাকি পরবে আমাদের দেশে। এটা নিয়েও স্টাডি এন্ড প্রিভেনশন মূলক কার্যক্রম হতে পারে আমাদের শিক্ষার্থী ও দেশ গড়ার কারিগরদের হাত ধরে।
প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে আমাদের শিক্ষার্থীরাই হতে পারে ফ্রন্টলাইন ওয়ারিয়র! আমাদের দেশ ও সমাজ এর বিদ্যাপীঠও প্রাচ্যের অক্সফোর্ড কেবল খেতাবে নয়, গবেষণা ও অবদানে ছাড়িয়ে যেতে পারে অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ, স্ট্যানফোর্ড কিংবা হার্ভার্ড কে! চেষ্টা করতে হবে। নিজের আখের গুছালেই হবে না কেবল।অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে বন্ধ রেখে অতিরিক্ত মনিটরিং করে, পেপাল ব্লক রেখে, ক্রিপ্টোকারেন্সি কে অবৈধ ঘোষণা দিয়ে যা যা করা হচ্ছে সেটা আরো মারাত্বক ভুল। পেয়নিয়রের মাস্টার কার্ড সেল করার জন্য এদেশে ফ্রিল্যান্সার গ্রেফতার হয়। কী ভাবছেন? অর্থনিতিতেও আমরা অনেক পিছিয়ে।
এটার জন্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ, ইন্সটিটিউট অফ কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট একাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ , ঢাকা ইউনিভার্সির IBA, সিকিইউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, এফবিসিসিআই, আইসিটি ডিপার্টমেন, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক… কেউ কি তার নিজ নিজ দায় এড়াতে পারবে?
আমাদের দেশ ও সমাজ এর  নীতিমালা কঠিন করতে হবে, তবে কাজ করার সুযোগ থাকতে হবে। আজ যারা ক্রিপ্টো কারেন্সিতে বিনিয়োগ করছেন, ভবিষ্যতে সেই বিনিয়োগ অনেক বড় হয়ে দাঁড়াবে।
অথচ বিষয়টা কেবল আপনাদের মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে বলেই ডিরেক্ট নিষিদ্ধ বলেই ক্ষান্ত হলেন! আমাদের দেশে আইন প্রনয়ণ এবং আইন প্রয়োগ, দুটি বিষয়কেই কঠোর ভাবে নিতে হবে- সব ক্ষেত্রে।
না হলে রাষ্ট্রের, প্রজাদের, এবং প্রজাতন্ত্রের চারকদের উদাসীনতাই পরিলক্ষিত হবে যুগে যুগে।
অনেক কিছু নিয়ে কাজ করতে হবে। মৎস্য গবেষণা, ধান গবেষণা, পাট গবেষণা, প্রোডাক্টিভিটি, সয়েল ফার্টিলিটি… এগুলো নিয়ে কাজ কেবল নির্দিষ্ট গভার্নমেন্ট ইন্সটিটিউটকেই নয়- প্রাইভেট সেক্টরের কোম্পানি থেকে শুরু করে ইউনিউভার্সিটিতে পর্যন্ত করতে হবে।
এতে করে আমরা যেমন সমস্যা গুলোকে সামাল দিতে পারবো, তেমনি একটা সুস্থ ধারা চালু হবে। নবীনরাও সুযোগ পাবে নিজেদের মেলে ধরতে।
আর সব শেষে বলব, আমাদের সরকারী/প্রশাসনিক কর্তাদের একটু পড়ালেখা করতে। উঁহু, বইয়ের পাতায় নয়… ইউটিউবে। নতুন নতুন বিষয়গুলোর জ্ঞান নিতে। এটাই সত্যি, তাদের পুথিগত বিদ্যার দরুন দেশ ও সমাজ আজ অবকাঠামোগত ক্যান্সারে ধুঁকছে।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ রিভার ডেল্টা, বিশ্বের সর্ববৃহৎ উপসাগর, বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত… এত সব রিসোর্স নিয়ে আমাদের করার অনেক কিছুই আছে, প্রয়োজন সদিচ্ছার!
নিজের কিছু অভিজ্ঞতা: বাংলার সাথে ইংরেজি কেউ রাষ্ট্র ভাষা করা উচিৎ। যাতে এদেশে শিশুরা মায়ের কোল থেকে বাংলার সাথে ইংরেজিতে কথা বলতে এবং বুঝতে শেখে।
বিদেশে ইংরেজি ভাল করে বলতে এবং বুঝতে না পারার কারনে আমার ছোট ছোট পদে চাকরি করতে বাধ্য হয়। ভারত, ফিলিপাইনে নাগরিকরা ইংরেজি ভাষায় বলতে এবং বুঝতে পারার কারনে, একি শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও বড় বড় পদ দখল করে আছে।
কারন ভারতীয় ফিলিপাইনের ছেলে মেয়েরা ছোট থেকে ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে শেখে।কারনে তাদের দেশে ভাষা ইংরেজি। আমার বলার উদ্দেশ্য এই না আমাদের মাতৃভাষা ভাল না।তবে মাতৃভাষার সাথে ভাল ক্যারিয়ার গড়তে যে ভাষা সেখা জরুরী সেটাও শিখতে হবে।
কানাডায় ভারতীয়রা সহযেই যেতে পারছে।কারন তারা ছোট থেকে হিন্দির সাথে ইংরেজিতে কথা বলে বড় হয়েছে।বাংলাদেশীরা যেতে চাইলেও যেতে পারছেনা কারন তারা ইংরেজিতে তেমন দক্ষ না ।
দুবাইতে বাংলাদেশিদের এ্যাভারেজ বেতন হয় বাংলা টাকায় ৫০-৬০ হাজার। তবে ভারতীয় বা ফিলিপিনোর বেতন হয় চোখ বন্ধ করে দেড় থেকে দুই লাখও।
কারণ তারা এখানে ইংরেজিকে আঁকড়ে ধরে অনেক দূর উঠে এসেছে। বাংলাদেশিরা এখানে হিন্দিকে আঁকড়ে ধরে এটা পাচ্ছে। কারণ হিন্দিটায় আমরা ভারতীয় সংস্কৃতির দরুন নিজের অজান্তেই শিখে ফেলেছি।
প্রজাতন্ত্রের একজন সামান্য অংশীদার
%d bloggers like this: