এসেক্সুয়ালিটি (Asexuality) :
নারী ও পুরুষের যৌন চেতনায় বিরাট একটা পার্থক্য আছে তাঁদের এসেক্সুয়ালিটি নিয়ে।
এসেক্সুয়ালিটি হলো একটি সেক্সুয়াল অরিয়েন্টেশন যা ১% এর কাছাকাছি নরনারী LGBTQ-এর মতই জন্মগত ভাবে পেয়ে থাকে।
এদের বৈশিষ্ট হলো, এঁরা কোনো জেন্ডারের প্রতিই সেক্সুয়ালি এট্রাকটেড ফীল করে না।
এঁরা ইম্পটেন্ট নয়, শারীরিক ভাবে যৌন মিলনে খুবই সক্ষম, এঁরা ব্রহ্মচারীও নন আবার, একই বা বিপরীত লিঙ্গিয় বন্ধু বান্ধবীও এদের থাকে। কিন্তু এঁরা তাঁদের কারো সাথে যৌনতা ইনক্লুসিভ কোনো রোমান্টিক সম্পর্কে জড়ান না বা জড়াতে পারেনই না।
এত কিছু বলছি কেন?
বলার কারন, সম্প্রতি জানলাম, একজন পুরুষ জন্মসুত্রে এসেক্সুয়াল না হলে তাঁদের জন্য আর কখনোই এসেক্সুয়াল হওয়া সম্ভব না। অথচ জন্মসুত্রে এসেক্সুয়াল নন, এমন একজন নারীর জন্য জীবনের একটি পর্যায়ে সেক্সুয়ালি একটিভ জীবন যাপন করার পরেও অন্য একটি পর্যায়ে এসেক্সুয়াল হয়ে যাওয়া মোটেও অসম্ভব না।
জন্মগত ভাবে এসেক্সুয়াল নন, এমন একজন নারী বৈধব্য বা বিচ্ছেদজনিত কারনে একা হয়ে পড়ার পর, যদি স্থায়ীভাবে একা থাকার সিদ্ধান্ত নেন, এজন্য, প্রথম প্রথম কিছুদিন হয়তো যৌনতা বিবর্জিত জীবনে কিছু সমস্যার মুখোমুখি তাঁরা হন, কিন্তু কিছুদিন এভাবে চলবার পর তাঁরা নিজে থেকেই এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠেন এবং এই এসেক্সুয়ালিটিতে এতটাই অভ্যস্ত হয়ে পড়েন যে বাকিটা জীবন তাঁদের জন্য এই এসেক্সুয়াল জীবনযাপনে আর কোনো সমস্যা হয় না।
এখানেই সমস্যার সূত্রপাত টিপিকাল পুরুষ মানসিকতার কারনে।
আমরা পুরুষরা এরকম একটা এসেক্সুয়াল জীবনযাপন যে সম্ভব, সেটা বুঝতেই পারি না। আমাদের নিজেদের জন্য তো নয়ই, নারীদের জন্যেও সেটা বোঝার কোনো সামর্থ আমাদের থাকে না।
আর এটা থাকে না বলেই দেখা যায়, পূর্বে যৌন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সিঙ্গেল কোনো নারীকে দেখলেই আমরা তাঁর প্রতি যতটা না ভালবাসা বসত, তারচেয়ে অনেক বেশী করুনা বসত তাদেরকে বিয়ে করে হোক বা বিবাহ বহির্ভুত ভাবেই হোক, যৌনতায় আগ্রহী করতে উদ্যত হই।
আমরা ভেবেও দেখি না, উনি কি তাঁর অযৌন জীবনটা স্বেচ্ছায় বেছে নিয়ে তাতে থিতু হয়েছেন কিনা।
তিনি তা যদি হয়েই থাকেন, এই অনাকাঙ্খিত আমন্ত্রনগুলি তাঁর জন্য যে কতটা বিরক্তির, কতটা অনভিপ্রেত, সেটা আমরা, এরকম করা পুরুষেরা কখনোই হয়তো বুঝবো না।
তাহলে কি একা হয়ে পড়া নারীকে প্রনয় নিবেদন না হোক, অন্ততঃ পুনঃবিবাহে আগ্রহী কিনা, তা জানতে চাওয়া যাবে না?
সেটা অবশ্যই জানতে চাওয়া যাবে, ইন প্লেন এন্ড সিম্পল টার্মস, কীপিং ইন মাইন্ড যে তিনি এসেক্সুয়াল জীবনে অভ্যস্ত হয়েও থাকতে পারেন।
একাকী হয়ে পড়া একজন নারী যদি বিবাহ বা প্রনয়ের প্রাথমিক অনুসন্ধানে আগ্রহ না দেখান, তাঁকে এ নিয়ে পিড়াপিড়ি করাটা হবে অত্যন্ত গর্হিত একটা কাজ। এবং এটা কোনোক্রমেই উত্যক্ত করার চেয়ে কম কিছু নয় ।
বলাই বাহুল্য যে, অতি দরদি সেজে হোক বা দরদ নিয়েই হোক এদেশে সিঙ্গেল হয়ে পড়া নারীদের ক্রমাগত এরকম উত্যক্ত করার মত মানুষের কোনোই অভাব হয় না। এঁরা হতে পারে, তাঁদের আত্মীয় স্বজন থেকে শুরু করে বন্ধুবান্ধব, সহপাঠি, এমনকি সহকর্মীরাও।
আপনি যদি সত্যিকারের শুভানুধ্যায়ি হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার যেটা করনীয়, তা হলো তাঁর কোনো আগ্রহ থাকলে সেটা আপনাকে জানাতে বলে রাখা। এর বেশী কিছুই না।জানবেন, যিনি অযৌনজীবন বেছে নিয়ে তাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন, তাঁর জন্য এরচেয়ে বেশী কিছু করাটা তাঁকে হয়রানি করার সমতুল্য কারন নারীর সেক্সুয়ালিটি ও পুরুষের সেক্সুয়ালিটির মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য রয়েছে।
নিজে সেক্সুয়ালি একটিভ নারী হয়েও যখন স্বেচ্ছায় অযৌনজীবন বেছে নেয়া কোনো নারীর যৌন চাহিদা অনুমান করাটা যেখানে ঠিক না, সেখানে নিজে পুরুষ হলে, নিজের যৌনানুভুতি দিয়ে একজন নারীর যৌনানুভুতি বা চাহিদার বিচার বা অনুমান করতে চাওয়াটা হবে মস্তো বড় ভুল ।
আসুন এবার একটি গল্প দেখে আসা যাকঃ
Asexuality হচ্ছে অকামিতা,