কোরআনে, আল্লাহ প্রকাশ করেন যে মানুষের সৃষ্টি একটি অলৌকিক ঘটনা। প্রথম মানব সন্তান আল্লাহ মাটির মধ্যে তৈরি করেছিলেন, তারপর তিনি এই মাটির কাঠামোকে রুহ দান করেন।

‘মানুষ মাটির তৈরি’—এ কথা সর্বতোভাবে হজরত আদম (আ.) সম্পর্কে প্রযোজ্য। তাঁর সৃষ্টির পর তাঁর সন্তানদের জন্ম হয়েছে তাঁর ঔরস থেকে। সেটা হয়েছে, নারী ও পুরুষের বিশেষ ক্রিয়ার মাধ্যমে। কোরআন বিষয়টাকে আরো সরাসরি বলেছে—‘মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি (বীর্য) থেকে।’ (সুরা : তারিক, আয়াত : ৬)

“আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, তাদেরকে সৃষ্টি করা কঠিনতর, না আমি অন্য যা সৃষ্টি করেছি? আমিই তাদেরকে সৃষ্টি করেছি আঠালো মাটি থেকে।“ [৩৭:১১]

আদি পিতা আদম (আ.) ও তাঁর সন্তানদের জন্ম প্রক্রিয়ার এ পার্থক্য বুঝতে না পারার কারণে কোনো কোনো অবিশ্বাসী অহেতুক কোরআনের বক্তব্যের ওপর আপত্তি করে। সুতরাং কোরআন যেখানে বলেছে, ‘মানুষ মাটির তৈরি’—কথাটা নিজ স্থানে সত্য। আবার যেখানে বলা হয়েছে, ‘মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে বীর্য থেকে’—এ কথাও নিজ স্থানে সত্য। উভয়ের মধ্যে পার্থক্য ও বৈপরীত্য নেই।

তবে পবিত্র কোরআনের আলোচ্য আয়াত থেকে একটি মৌলিক সত্য জানা যায়। বিষয়টি হলো, মানুষের মূল উপাদান মাটি থেকে প্রস্তুত হয়েছে। এ উপাদান প্রস্তুত করতে তাতে সুনিশ্চিতভাবে পানি ঢোকানো হয়েছে। কোরআনের এ বক্তব্য অকাট্য ও চিরস্থায়ী। আজ অবধি কোনো মতবাদের সঙ্গে এ বক্তব্যের সংঘাত হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না।

কোরআন বলছে, মানুষের সৃষ্টি একটি অলৌকিক ঘটনা। মহান আল্লাহ কাদামাটি দিয়ে প্রথম মানব সৃষ্টি করেছেন। তারপর তিনি এই কাদার কাঠামোকে রুহ বা আত্মা দান করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো, তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাদের বলেছিলেন, আমি মানুষ সৃষ্টি করছি কাদামাটি থেকে। যখন আমি তাকে সুষম করব এবং তাতে আমার রুহ সঞ্চার করব, তখন তোমরা তার প্রতি সিজদাবনত হয়ো।’ (সুরা : সাদ, আয়াত : ৭২-৭৩)

কোরআনের এ বক্তব্য আদি পিতা আদম (আ.)-এর গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে। তবে পিতার এই জন্ম-উপাদান বংশ পরম্পরায় ধারণ করেছে সন্তানরা। তাই বর্তমানে যখন মানষের শরীর পরীক্ষা করা হয়, তখন দেখা যায়, মাটির অনেক উপাদান মানবদেহে বিদ্যমান। জীবিত পেশিতে আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৯৫ শতাংশ কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও সালফারসহ সব মিলিয়ে প্রায় ২৬টি উপাদান পাওয়া যায়। কোরআনের অন্য আয়াতে আরো পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, ‘আমি তো মানুষ সৃষ্টি করেছি মাটির উপাদান (মাটি জাতীয় উপকরণ) থেকে।’ (সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ১২)

আমরা দেখি, আধুনিক বিজ্ঞানের পাওয়া এ তথ্য পবিত্র কোরআনে ১৪০০ বছর আগে প্রকাশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞান থেকে যদি ব্যাখ্যা করা হয় ->

আজ কখন মানুষের শরীর পরীক্ষা করা হয়, এইটি খুঁজে বার করা হয়ত যাবে যে পৃথিবীর মাটির অনেক উপাদান মানব শরীরে বর্তমান আছে। জীবিত পেশীতে প্রায় ৯৫{65d74b771b6ceff07eaefc19ffed56e0ab6ea89ffc0f0b38516c35f1ac414386} কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং সালফার সহ সব মিলিয়ে প্রায় ২৬ টি উপাদান পাওয়া যায়, কোরআনের অন্য একটি আয়াতে বলা হয়েছে:

“আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।“ [২৩:১২].

নিচে একটি ৭০ কেজি মানবদেহে প্রাপ্ত উপাদানের পরিমাণ দেয়া হল।

আরও পড়ুনঃ

কিভাবে কাটাবে রমজানে পিরিয়ডের দিন গুলো

কাশি দেওয়ার সময় মহিলাদের প্রস্রাব চলে আসে কেন?

হঠাৎ করে বসা অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়ালে মাথা ঘোরে কেন? করণীয় কী?

spend your day in Ramadan? QNA

টেলিপ্যাথি কী? টেলিপ্যাথি’র মাধ্যমে কীভাবে যোগাযোগ হয়ে থাকে?

চিন্তা ও টেনশন মুক্ত জীবন পেতে করনীয় কি ?

কী এমন প্রশ্ন করে মানুষের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারি?

উপাদান +সংকেত+ শতকরা–

অক্সিজেন O -৬৫.০-৪৩০০০

কার্বন C-১৮.৫-১২০০০

হাইড্রজেন H-৯.৫-৬৩০০

নাইট্রোজেন-N-৩.৩-২০০০

ক্যালসিয়াম-CA ১.৫-১১০০

ফস্ফরাস P-১.০-৭৫০

পটাশিয়াম K-.৩৫-২২৫

সালফার S-.২৫-১৫০

ক্লোরিন-CL .১৫-১০০

সোডিয়াম NA-.১৫-৯০

ম্যাগ্নেসিয়াম-MG-.০৫-৩৫

সিলিকন-SI-.০৫-৩০

লোহা FR-.০১-৪২০০

দস্তা ZN-.০১-২৪০০

তামা CU-.০১-৯০

বোরন BR .০১-৬৮

কোবাল্ট CO-.০১-২০

ভ্যানাডিয়াম-VD-.০১-২০

আয়ডিন I-.০১-১৫

সেলেনিয়াম-SE-.০১-১৫

ম্যাঙ্গানিজ MN-.০১-১৩

মলিবডেনাম-MO-.০১-৮

ক্রমিয়াম-CR-.০১-৬।

আমাদের দেহে মাটিতে থাকা প্রায় সব উপাদান বিদ্যমান।

সূত্রঃ কোরআন এবং ইন্টারনেট