ফেসবুক অ্যাড এর ক্ষেত্রে এখন প্রায়ই শোনা যায়, যে আমি বুস্ট করছি কিন্তু রেজাল্ট পাচ্ছিনা ।

আজকের আলাপ আলোচনা তাই ফেসবুক অ্যাড নিয়ে

কোন জায়গাটায় না দুই নাম্বারি হচ্ছে?

বিকাশের প্রতারকচক্র আছে,

কিছুদিন আগে শুনলাম যে করোনার টিকা এখানেও নাকি ফোন করে প্রতারণা করা হচ্ছে,

অনেক ফ্রীলান্সিং মারকেটপ্লেস নষ্ট হয়ে গেছে বিভিন্ন রকম প্রতারণার দায়ে,

এখন শুরু হয়েছে ফেসবুকে।

কথা হচ্ছে যে নিজের দেশে আপনি হয়তো বা বাটপারি করে, প্রতারণা করে অনেক কিছু হয়তো হাতিয়ে নেয়ার কথা চিন্তা করতে পারবেন, কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে আপনি যদি এটা করতে চান তাহলে আমার মনে হয় না এটা সম্ভব। আর সেটা যদি হয় ফেসবুকের মত বিরাট প্লাটফর্ম তাহলে তো অবশ্যই না।

দুই ডলারের ফেসবুক অ্যাড, ফেসবুক এর সাথে বাটপারি, এবং এর পরিণাম

একটু বিস্তারিতভাবে বলি, একটা সময় ফেসবুক থেকে কুপন দেয়া হতো সেখানে একটা কোড থাকত এবং আপনি সেই কোডটি নিজে ব্যবহার না করে অন্য কারো কাছে বিক্রি করতে পারতেন, কেউ আপনাকে টাকা দিত আপনি কোডটা দিয়ে দিতেন, সেই কোডটা ব্যবহার করে তারা অ্যাড দিতে পারতো যদিও সেটা ফেসবুক পলিসির বাইরে ছিল।

 

ফেসবুকে আর একটা ব্যাপার আছে যে ব্যাপারটার সুযোগ নিয়ে ফেসবুকের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে, সেটা হচ্ছে ফেসবুকের অ্যাড অ্যাকাউন্ট এ থেরাসহোল্ড আছে সেটা কিরকম? সেটা হচ্ছে আপনি আপনার কার্ডে ফেসবুকে অ্যাড করবেন এরপর ফেসবুক আপনাকে দুই ডলারের একটি থেরাসহোল্ড দিবে, থেরাসহোল্ড এর পরিমাণ আগে আরো বেশি ছিল কিন্তু ফেসবুকই আমাদের এই কাহিনী দেখে এটার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে, তারপরও এই দুই নাম্বারি গুলা বন্ধ হয়নি।

 

দুই নাম্বারি কি রকম? আপনার কার্ডে টাকা নেই আপনি সেই কার্ড ফেসবুকে এড করেছেন, ফেসবুকে অ্যাড দিয়েছেন সেই অ্যাড ২ ডলার পর্যন্ত চলেছে,এরপর ফেসবুক যখন নিয়ম অনুযায়ি ২ ডলার পর টাকা কাটতে গেছে, তখন তারা আপনার কার্ডে কোন টাকা পায়নি এবং না পেয়ে তারা আপনার অ্যাড একাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে।

 

কিন্তু আপনার ২ ডলার অ্যাড হয়ে গেল ২ ডলারে আপনি কিছু সেল পেলেন , লাইক পেলেন আরো অনেক কিছু পেলে্‌ এখন চিন্তা করেন এরা কি করছে তারা ফেক অ্যাকাউন্ট তৈরি করছে, একশটা অ্যাকাউন্ট যদি তৈরি করতে পারে তাহলে ১০০ থেকে ২০০ ডলারের অ্যাড দিতে পারছে।

 

এই ফেক অ্যাকাউন্ট খোলে তারা সাধারণ মানুষজনের কাছে, যারা অনলাইনে বিজনেস করে তাদের কাছে “কুপন” বলে বিক্রি করছেন ৩০ টাকা ৪০ টাকা ৫০ টাকা এরকম করে, এবং যারা কিনছেন তারা মনে করছে যে ১০০ টাকা বা ১১০ টাকা বা ১১৫ টাকা এরকম দিয়ে অ্যাড করলে অনেক সময় দেখা যায় যে আমার প্রোডাক্ট সেল হয় না আমার অ্যাডর টাকাই উঠেনা তো সেই জায়গায় আমি ৩০ টাকা ৪০ টাকা দিয়ে আমি যদি অ্যাড দিতে পারি তাহলে অন্ততপক্ষে আমার অ্যাডর টাকা উঠে আসবে। চিন্তা না করেই, জেনেশুনে আগুনে পা দেওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হচ্ছে।

 

এখন ফেসবুক কোন কুপন দিচ্ছে না যেটা দিচ্ছে সেটা হচ্ছে ক্রেডিট যেখানে কোনো কোড নেই নেই, এই কুপনগুলা গুলা বিক্রি করার কোনো সুযোগ নেই, যেসব অ্যাকাউন্ট কুপন পাচ্ছে সেসব অ্যাকাউন্টটি সেটি ব্যবহার করতে পারবেন তবে কুপন/ক্রেডিট পাওয়া এতো সহজ নয়।

 

আমি প্রায় দেড় হাজার ডলার খরচ করার পর আমাকে দেড় ডলারের মত ক্রেডিট দেয়া হয়েছিল।প্রাথমিক একটা পেনাল্টি ফেসবুকে দিয়েছে ১৫ ডলার থেকে নিয়ে ২ ডলারে নিয়ে এসেছে, এরকম যদি হতেই থাকে এবং পেনাল্টি শুধু এতোটুকু ই না পেনাল্টি হচ্ছে অনেক, যেহেতু বিভিন্ন রকম করে ফেক একাউন্ট করে এই কাজগুলো করা হচ্ছে তাই অনেক অরজিনাল একাউন্টও রেস্ট্রিক্টেড হয়ে যাচ্ছে ফেসবুক অ্যাড থেকে, তাহলে যারা অরিজিনাল ভাবে কাজ করছে তারাও কিন্তু ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না।

 

অনেক পার্সোনাল একাউন্ট ডিজেবল হয়ে যাচ্ছে, কেন? ফেসবুক দেখছে যে অনেক পার্সোনাল একাউন্ট থেকে এই কাজগুলা হচ্ছে। যে পার্সোনাল অ্যাকাউন্টে একটু সন্দেহ করছে ফেসবুক ডিজেবল করে দিচ্ছে এবং এর ধারাবাহিকতায় অনেক অ্যাড একাউন্ট ডিজেবল হয়ে যাচ্ছে পার্মানেন্ট ভাবে, এবং আরো খারাপ খবর হচ্ছে অনেকে এখন অ্যাড একাউন্ট করতে পারছে না, একাউন্ট করার সাথে সাথে ডিজেবল হয়ে যাচ্ছে।

 

কোথায় যাচ্ছি আমরা? বিকাশে প্রতারণা হচ্ছে এবং তারা বিভিন্ন রকম ভাবে সে প্রতারণায় কেউ যেন না পড়ে সেজন্য সাবধান করে দিচ্ছে এটাই স্বাভাবিক।

তাহলে যখন এরকম হবে ফেসবুক তো চুপচাপ বসে থাকবে না এবং ফেসবুক চুপচাপ বসে থাকেও নি। এরকম হতে থাকলে আমার মনে হয় যে বাংলাদেশের অধিকাংশ একাউন্ট ডিজেবল হয়ে যাবে পার্মানেন্টলি এবং নতুন করে কোনো অ্যাকাউন্টও করাও যাবেনা অথবা ফেসবুক এরকম নিয়ম করে দিবে যার পেজ তার নিজস্ব অ্যাড একাউন্ট থাকতে হবে ।তাহলে অ্যাড দিতে পারবে।

 

আর এটা যদি হয় তাহলে ৭০-৮০ শতাংশ ফেসবুক পেজ বন্ধ হয়ে যাবে কারন সবার পক্ষে ফেসবুকে নিজে নিজে অ্যাড দেওয়া সম্ভব না কারন এখানে কার্ডের ব্যাপার থাকে, স্কিল এর ব্যাপার থাকে, এখানে আরো অনেক ব্যাপার থাকে তাই আমার মনে হয় এখনো সুযোগ আছে এই জায়গা থেকে সরে আসার, আপনারা যারা মনে করছেন যে ১০০ টাকা, ১১০ টাকা এরকম দিয়ে বুস্ট করলে খরচ ও উঠে না।এরকম মনে করে যারা বিজনেস করছেন আমি বলব যে এরকম মনে করে বিজনেস ফিল্ডে আপনাদের নামা উচিত না।

 

আপনি যখন একটা বিজনেস করতে নামবেন আপনাকে রিস্কের ব্যাপারটা মাথায় রেখেই নামতে হবে, আপনার লস হবে সেটা আপনাকে মাইন্ডে নিয়েই নামতে হবে, এখানে কোনো ফাঁকফোকরে যাওয়া যাবে না যে আমি ২০ টাকা দিয়ে ৩০ টাকা দিয়ে ডলার কিনে যদি কিছু বিক্রি করতে পারি আমার অ্যাড এর খরচ উঠে গেল, এভাবে বিজনেস হয়না, আপনি বিজনেস করতে পারছেন না আর যারা ভালো করে বিজনেস করছে, ঠিকমতো বিজনেস করছে তাদেরও করতে দিচ্ছেন না ।

 

আমার মনে হয় যে এখনো সময় আছে এই জায়গাগুলো থেকে বের হয়ে আসার ফেসবুকের পলিসি, ফেসবুকের টেকনোলজি অনেক হাই অনেক এডভান্সড, তাই এখানে আপনি মানে কি বলবো তাই এখানে আপনি ওই চিন্তা করবেন না যে ফেসবুকে কোনভাবে যদি কিছু করা যায় তাহলে হয়ে গেলো।

এগুলো করা যাবে না, “করা যাবে না” বলেও লাভ হবে কিনা জানিনা তবে আমার মনে হয় যে এখনো সময় আছে এই চিন্তা করবেন না, এফ কমার্স অথবা ফেসবুক বিজনেস কে যদি বাঁচিয়ে যদি রাখতে চান আপনাদেরকে সঠিক পথে সঠিকভাবে ফেসবুকে কাজ করতে হবে এটাই একমাত্র শর্ত এর কোন বিকল্প নেই।

সোর্সঃ ফেসবুক

see our videos on YouTube

ধন্যবাদ