by Md Kawsar Munna | Jun 22, 2021 | Knowledge
অনেকই আছেন যানেন না ফাইভার কি?
কোনো লোকাল ট্রেনিং সেন্টার এ কাজ শিখেছেন এবং ফাইভারে একাউন্ট খুলেছেন, গিগ ও পাবলিশ করেছেন কিন্তু কাজ পাচ্ছেন না । গিগ র্যাঙ্ক করছে না, ইম্প্রেশন কম, ক্লিক নেই এমন আরো অনেক অসুবিধা । সেজন্যই এই লেখা!
আসুন শুরু করি একটু আগে থেকেই, এর আগে আমার দুইটি আইডি ডিজেবল হয়ে যায় ১৮০ ডলার ও ২৮ ডলার ব্যালেন্স সহ শুধুমাত্র ফাইভারের টার্মস এন্ড কন্ডিশন না জানার কারনে এবং ভায়োলেশনের কারনে এবং সেটা গত মাসেই ।
তো যারা শুরু করছেন, আমার একান্ত অনুরোধ আপনি যদি কোনো কাজ না পারেন, না শিখে থাকেন বা সেটাতে দক্ষ না হন, এখনই একাউণ্ট খোলার দরকার নেই । অনেক ট্রেনিং সেন্টার আছে, স্বল্পমূল্যে কোর্স করাচ্ছে, অবশ্যই ধোকাবাজদের থেকে সাবধান !!!!
ভালোমত খোজখবর নিয়ে, বর্তমান স্টুডেন্ট এবং আগের যারা কোর্স করেছে এবং এখন কাজ করছেন তাদের ফীডব্যাক নিয়ে ভর্তি হবেন, আর একটু বুদ্ধিমান হলে আপনি ইউটিউব/অনলাইন থেকেই অনেক কিছু শিখতে পারবেন ।
কোর্স করলেন, কাজ ও শিখলেন এবার কি ?
এবার আপনার কাজ, সেই কাজগুলো নিয়মিত প্র্যাকটিস করা, নয়তো ভুলে যাবেন যতই ভালো পারেন আর দক্ষ হোন ।
এরপর আমার অভিমত হোল, প্রত্যেকটা জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস যেমন, ফাইভার, আপওয়ার্ক, গুরু, পিপল পার আওয়ার এগুলোতে একাউণ্ট খুলবেন । অবশ্যই নিজের ছবি, আইডি এবং সঠিক তথ্য দিয়ে ।
আর হ্যা, একাউণ্ট খোলার সময় অবশ্যই টার্মস এন্ড কন্ডিশন গুলো ভালোমত পড়ে, নিজে না বুঝলে অন্য কারো কাছ থেকে বুঝে একাউণ্ট ওপেন করবেন ।
ইংরেজি দক্ষতা !
ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে হলে অবশ্যই! অবশ্যই আপনাকে ইংরেজি জানতে হবে এবং লিখতে পারতে হবে । নাহয় বায়ার/ক্লায়েন্ট কি বলছে তা আপনি বুঝবেন না, আর তাকে আপনার কথাও বুঝাতে পারবেন না । কাজ পেলেও লাভ হবেনা, কারন বায়ার ফীডব্যাক দিবে খারাপ যত ভালো কাজই করেন ।
গিগ র্যাঙ্ক, ইম্প্রেশন, ক্লিক, প্রোফাইল ও গিগ তৈরী এবং পাব্লিশ
গিগ র্যাঙ্ক এর বিষয়টা মূলত অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে। কেউ যখন আমাকে প্রশ্ন করে, ভাই গিগ তো র্যাঙ্ক হচ্ছেই নাহ। তখন আমি সবার প্রথমেই তাকে জিজ্ঞেস করি আপনি প্রতিদিন ১০ টা বায়ার রিকুয়েস্ট পাঠাচ্ছেন তো? প্রায় সবারই উত্তর একই থাকে, আগে পাঠাতাম এখন আর পাঠাই না। যদি জিজ্ঞেস করি কেন পাঠান নাহ? তখন উত্তর দেয় পাঠিয়ে কোনো লাভ হয়না।
এখানে আরেকটা বিষয় সামনে আসে, আমরা বায়ার রিকুয়েস্ট আসলে কিভাবে লিখবো, অথবা কিভাবে বায়ার রিকুয়েস্ট পাঠালে বায়ার রিপ্লাই করবে। তো সেই বিষয়টা আমি পরবর্তী পর্বে আলোচনা করবো।
আজকে মূলত আলোচনা করব বায়ার রিকুয়েস্ট কি দেয়া বন্ধ করে দিবো? বায়ার রিকুয়েস্ট আসলে কাজে লাগে কিনা?
প্রথম কথা হলো, বায়ার রিকুয়েস্ট-ই হলো একমাত্র সহজ ভাবে অরগানিক ওয়ে-তে ক্লাইন্টদের কাছে পৌঁছানোর মাধ্যম। আরও অনেক ওয়ে আছে ক্লাইন্ট খুঁজে বের করার জন্য। কিন্তু ফাইভার খুব সুন্দর একটা সিস্টেম আমার এবং আপনার জন্য আগে থেকেই তৈরি করে রেখেছে বায়ার এর কাছে আমাদের অফার গুলো পৌঁছানোর জন্য।
ফাইভারে আপনি যদি বুঝে বায়ার রিকুয়েস্ট গুলো প্রতিদিন পাঠাতে পারেন তাহলে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভবনা অনেক গুন বেড়ে যাবে। এবার ধরেন কাজ পেলেন নাহ, কেউ নক করলোনা, তাহলে কি লাভ শুধু শুধু সময় নষ্ট করে বায়ার রিকুয়েস্ট দেয়ার, তাইনা?
অবশ্যই লাভ আছে। একটা কথা আছেনা “হাতি মরলেও লাখ টাকা, বাঁচলেও লাখ টাকা”। ফাইভার এর বায়ার রিকুয়েস্ট হলো সেই হাতির মতই। আপনি কাজ পেলে তো আলহামদুলিল্লাহ, আর না পেলেও অনেক লাভ।
(লাভ নাম্বার-১);
ধরেন আপনি একদিনে ১০টা বায়ার রিকুয়েস্ট দিলেন। তো ১০ জনের কেউ আপনাকে কাজ না দিলেও কয়েকজন ঠিকই আপনার রিকুয়েস্ট টা ওপেন করবে।
আপনি যে গিগ এর আন্ডার-এ রিকুয়েস্ট টা দিয়েছেন সেটা বা আপনার প্রোফাইল টা ভিজিট করবে। এতে আপনার প্রোফাইলের ক্লিক/ইম্প্রেশন বাড়বে। আর ক্লিক বা ইম্প্রেশন বাড়লে আপনার গিগ আস্তে আস্তে সামনে আসতে থাকবে। আর এই ক্লিক/ইম্প্রেশন এর সাথে অন্যান্য গ্রুপে আপনার আইডি বা গিগ শেয়ার এর ক্লিক/ ইম্প্রেশন এর তুলনা ভুলেও করবেন নাহ।
ওইখানে যাদের ক্লিকের কারনে আপনার ইম্প্রেশন বাড়ে তারা ৯৯% হলো সেলার। যাদের থেকে কাজ পাওয়ার সম্ভবনা ১% এরও কম। আর এইযে ফাইভার থেকে যে ক্লিক আর ইম্প্রেশন পেলেন সেটা বায়ার এর বদৌলতে। আর এখান থেকে ১০টা ক্লিক পেলে ১ টা কাজ পাওয়ার সম্ভবনা খুব-ই বেশি।
আর ঐযে বিভিন্ন গ্রুপের থেকে যে ক্লিক আর ইম্প্রেশন পেলেন তার থেকে কাজ পাওয়ার সম্ভবনা যেহেতু নাই বললেই চলে, সেহেতু ফাইভার ভাববে আপনার গিগ টা হয়ত ইন্টারেস্টিং কিন্তু আপনার গিগ টার কোথাও প্রবলেম আছে, সেজন্য হয়ত মানুষ ক্লিক করে কিন্তু অর্ডার দেয়ানা। তখনই আপনার গিগ পিছনে যেতে থাকবে।
(লাভ নাম্বার-২);
একটা কথা মনে রাখবেন, ফাইভার আপনার-আমার থেকেও চালাক। হ্যা ফাইভার হয়ত আমাদের মত চুরি-বাটপারি কম বুঝে। কিন্তু ভালো জিনিসগুলো ফাইভার আমাদের থেকেও বেশি বুঝতে পারে। একটা জিনিস খেয়াল করেন তো, আপনি যখন একটা পিসি তে দুইটা আইডি, অথবা একই আইপি দিয়ে দুইটা আইডি ব্যবহার করেন তখন ফাইবার কিন্তু আজ হোক, কাল হোক ধরে ফেলে।
আবার ধরেন আপনি ফাইভারের মেসেজ অপশনে তাদের কোনো একটা রুলস ভায়োলেট করলেন, ফাইবার কিন্তু সেটাও ধরতে পারে। এগুলো ধরার জন্য কিন্তু তারা ২৪/৭ মানুষ বসিয়ে রাখেনা। তাদের আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স টা সেভাবেই তৈরি করা যাতে মাক্সিমাম কাজগুলো অটোমেটিক্যালি হয়ে যায়। হ্যা, ফাইনাল ডিসিশন বা অন্যান্য কিছু কাজ তারা ম্যানুয়ালি করে থাকে।
তো যেই ফাইভারের এতো বুদ্ধি, সে কি জানেনা কোন আইডি টা আসলেই প্রতিদিন অ্যাক্টিভ থাকে আর কোন আইডি টা বিভিন্ন টুলস দিয়ে অ্যাক্টিভ আছে। আমি বলছিনা, টুলস দিয়ে অ্যাক্টিভ থাকা খারাপ বা ভালো। আমি বলছি ফাইভার সেটা বুঝে যে, কে আসলেই অ্যাক্টিভ আর কে জাস্ট আইডিতে রিফ্রেশার দিয়ে কাজ চালাচ্ছে। আর ফাইভার সেটা স্ট্রিক্টলি এখন পর্যন্ত নিষেধ ও করে নাই।
তো টুলস ব্যবহার করে অ্যাক্টিভ থাকবেন কিনা সেটা আপনার ইচ্ছা। আমার কথা হলো, আপনি যখন ১০ টা ব্যায়ার রিকুয়েস্ট পাঠাবেন প্রতিদিন, তখন ফাইভার বুঝবে আপনি আসলেই অ্যাক্টিভ। আর এটা বুঝার জন্য ফাইভারের কাস্টমার ম্যনেজম্যান্ট টিম আসবেনা। সেই কাজটা ফাইবারের আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজ্যান্স অটোমেটিক্যালি করে ফেলতে পারে। আর গিগ র্যাঙ্ক করার জন্য ফাইভারকে এটা বুঝানো খুবই জরুরি যে আপনি ফাইভারকে সময় দিচ্ছেন।
আর ফাইভার যখন দেখবে আপনি তাকে সময় দিচ্ছেন, দেখবেন ফাইভার-ও আপনাকে সময় দেয়া শুরু করবে। আর ফাইভার একবার আপনাকে সময় দিলে কি হতে পারে সেটা আপনার আসেপাশে চোখ রাখলেই বুঝতে পারবেন।
(more…)
by Md Kawsar Munna | Jun 22, 2021 | Knowledge, Technology
ফেসবুক এ্যাড টার্গেটিং স্ট্রাটেজি
আমরা মুলত ডিটেল টার্গেটিং থেকে বিভিন্ন কি ওয়ার্ড ব্যবহার করে ফেসবুক এ্যাড দিয়ে থাকি এবং সেখানে “Interest” ক্যাটাগরিতে যা আছে সেগুলিই ব্যবহার করে থাকি, যার ফলে কম্পিটিশনে অনেক এ্যাডহারিয়ে যায়, কারন হাজার হাজার এ্যাড কিছু কমন টার্গেটিং কি ওয়ার্ড ব্যবহার করা হয় “অনলাইন শপিং“, “শপিং এন্ড ফ্যাশন” “ক্লোথিং” ইত্যাদি।
এরকম ভাবে চেস্টা করে যে একদমই কাজ হয় না সেটা নয়, কাজ হয় তবে ব্যাপারটা অনেকটা অন্ধকারে ঢিল ছুড়ার মত অবস্থা হয়ে দাঁড়ায়, সে ক্ষেত্রে নিচে কিছু টার্গেটিং স্ট্রাটেজি নিয়ে আলোচনা করার চেস্টা করছি
রিটার্গেটিং ফেসবুক এ্যাড চালান
রিটার্গেটিং এ্যাড তারাই দেখবে যারা আপনাকে আগে থেকে চিনে, সেই চেনা-পরিচয়টা বিভিন্নভাবে হতে পারে, মোবাইলের মাধ্যমে হতে পারে, ইমেইলের মাধ্যমে হতে পারে, আপনার ওয়েব সাইট অথবা ফেসবুক পেজের এক্টিভিটি থেকে হতে পারে, আপনার পেজে পোস্ট করা ভিডিও ভিউজ থেকেও হতে পারে, আপনি তাদেরকে নিয়ে অডিয়েন্স তৈরি করে এ্যাড দিতে পারেন।
এখানে একটা কথা বলা জরুরি।
যেমন ধরেন আপনার ফেসবুক পেজে গত ৬ মাসে যারা ভিজিট করেছে তারা আপনার এ্যাডদেখবে, এখন গত ছয় মাসে যারা আপনার পেইজ ভিজিট করেছে তারা সবাই কি আপনার পেজ অনেক সময় নিয়ে ঘুরে দেখেছে? অথবা সব অফার সে স্ক্রল করে করে দেখেছে? এতো টাইম কই মানুষের এখন?
যে আপনার পেজে ভিজিট করেছে সে ৫ সেকেন্ড থাকুক আর ৫ মিনিট আপনি যদি তাদেরকে কাস্টোম অডিয়েন্সে রেখে, এ্যাড চালান তাহলে সেই এ্যাড দেখতে তাকে আপনার পেজে যেতে হবে না, সে তার নিজের টাইমলাইনে আপনার এ্যাড দেখতে পারবে, আর আমরা মূলত কোন নির্দিষ্ট পেজে না গিয়ে নিজস্ব টাইমলাইন স্ক্রল করতে পছন্দ করি। যেটা বুঝাতে চাইলাম আশা করি সেটা বুঝতে পেরেছেন।
আচ্ছা এ এতো গেলো এ্যাড সেটে আপনি কিভাবে টার্গেট করবেন, এখানে আরেকটা ব্যাপার বলতে চাই আপনার যদি মাল্টিপল প্রোডাক্ট থাকে তাহলে আপনি এখানে মাল্টিসেট করে এ্যাড দিতে পারেন, ধরেন আপনার কিছু প্রডাক্টের এ্যাড ছেলেদের দেখানো দরকার, কিছু এ্যাড মেয়েদের দেখানো দরকার, তাহলে মাল্টিসেটে একড়ি সেটে ছেলে দেন, আরেকটি সেটে মেয়ে দেন, বাকি যেমন আছে তেমনই থাকুক।
এখানে জেন্ডার দিয়ে উধারন দিলাম, পার্থক্যটা অন্য জায়গা থেকেও আসতে পারে।
আর এ্যাড বানানোর ক্ষেত্রে আমি বলবো দুইটা এ্যাড কপি বানান, একটাতে মেয়েদের ড্রেস আরেকটাতে ছেলেদের ড্রেস। এখন আপনি বলতে পারেন আলাদা আলাদা এ্যাড বানালেই তো হয় এতো ঝামেলা করার কি দরকার, এখানে আমি বলবো একই এ্যাড বিভিন্ন প্রডাক্ট দেখানো গেলে সেটাই করেন, কারন আপনার এক সাথে একাধিক এ্যাড চলতে থাকলে তারা নিজেদের সাথে কম্পিটিশন শুরু করে দেয়, তখন একটা এ্যাড এর পারফর্মেন্স হয়ে যায় ভালো আরেকটা এ্যাড কম্পিটিশনে টিকে থাকে না।
এই হলো যারা আপনাকে চিনে আগে থেকে তাদের নিয়ে এ্যাড বানানো, কিন্তু যারা আপনাকে একদমই চিনে না? যাদেরকে আমরা কোল্ড অডিয়েন্স বলে থাকি তাদের ব্যাপারে কি হবে?
এখানেও প্রচলিত নিয়মে ডিটেল টার্গেটিং থেকে কি ওয়ার্ড না দিয়ে আপনি যে কাস্টোম অডিয়েন্স তৈরি করেছেন, সেটা আপনার সুবিধামত যেখান থেকেই করে থাকেন সেই কাস্টোম অডিয়েন্স দিয়ে লুকে লাইক অডিয়েন্স অডিয়েন্স তৈরি করে এরপর এ্যাড চালান। লুকে লাইক অডিয়েন্স কিন্তু আপনাকে আগে থেকে চিনে না, তারা হচ্ছে যারা আপনাকে আগে থেকে চিনে তাদের মতই এক্টিভিটি, ডেমোগ্রাফিক ইত্যাদি মিলে যাওয়া মানুষজন।
একটা উদাহারন
ধরেন আপনি ক্রিকেট ব্যাট বিক্রি করবেন, সে জন্য কাস্টোম অডিয়েন্স করেছেন যারা আপনাকে আগে থেকে চিনে, এরপর আপনি লুকে লাইক অডিয়েন্স তৈরি করলেন তখন ফেসবুক কিছু অডিয়েন্স দিয়ে ডাটাবেজ তৈরি করে দিবে আপনাকে যেখানে তারা থাকবে যারা ক্রিকেট ব্যাটে কিনতে আগ্রহি, কারন যে কাস্টোম অডিয়েন্স থেকে আপনি লুকে লাইক করেছেন সেখানে অনেকেই ছিলো যারা ক্রিকেট ব্যাটে আগ্রহি।
তাহলে বুঝতেই পারছেন, একদম নতুন অডিয়েন্সের কাছে এ্যাড দিচ্ছেন তবে এটাকে কিন্তু অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়ার মত ব্যাপার বলা যাবে না, তারা হয়তো আপনাকে চিনে না তবে তারা আপনার প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস সম্পর্কে আগ্রহি।
ফেসবুক এ্যাড আগের থেকে অনেক পরিবর্তন হয়েছে, এবং হচ্ছে, কারন কম্পিটিশন বাড়ছে, তাই আগে আপনার এ্যাড ভালো পারফর্মেন্স হতো এখন হয় না কেন এরকম যুক্তি দিয়ে বসে থাকলে হবে না, ফেসবুকের সাথে সাথে আপনাকেও আপডেট হতে হবে। সবাই যা করছে সেদিকে গা ভাসিয়ে না দিয়ে সবাই কি করছে না, কোন জায়গাটা খালি আছে কাজ করার জন্য এগুলো খুঁজে বের করে কাজ করার চেস্টা করুন আশা করি ভালো ফলাফল পাবেন।
প্রশ্ন উত্তরঃ
প্রশ্ন
একটা ব্যাপার লক্ষ্য করছি, কাস্টম অডিয়েন্স ক্রিয়েট করার পরে ঐ কাস্টম অডিয়েন্স সিলেক্ট করলে পটেনশিয়াল রিচ আনএভেইলেবল দেখায়, এবং বেশিরভাগ এড রিজেক্ট হয়ে যায়। এই সমস্যার সমাধান কি হবে?? বললে উপকৃত হব।
উত্তরঃ
অডিয়েন্সের জন্য এ্যাড রিজেক্ট হবার কথা আগে শুনি নাই, তবে সেই এ্যাড যে অডিয়েন্সের জন্যই হচ্ছে কিনা সেটা দেখার প্রয়োজন, কারন অনেক ছোট ছোট কারনেও এ্যাড রিজেক্ট হয়ে যায় ।
by Md Kawsar Munna | Jun 13, 2021 | Story
মধ্যবিত্ত কারা, এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। তবে আয়ের দিক থেকে বিশ্বের মানুষকে সাধারণত পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন: দরিদ্র, স্বল্প আয়ের মানুষ, মধ্য আয়ের মানুষ, উচ্চ মধ্যম আয়ের ও উচ্চ আয়ের মানুষ। যারা দিনে ২ ডলারের কম আয় করে, তারাই দরিদ্র বলে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।
দিনে ২ দশমিক শূন্য ১ ডলার থেকে ১০ ডলার পর্যন্ত আয় হলে তারা নিম্ন আয়ের মানুষ, ১০ দশমিক শূন্য ১ ডলার থেকে ২০ পর্যন্ত আয়ের মানুষেরাই মধ্যম আয়ের, ২০ দশমিক শূন্য ১ থেকে ৫০ ডলার আয় হলে উচ্চ মধ্যম আয়ের ও দিনে ৫০ ডলারের বেশি আয় হলে তারা উচ্চ আয়ের শ্রেণিতে পড়বে। তবে দেশভেদে এই সংজ্ঞা বদলে যায়। এই আয় ক্রয়ক্ষমতার সমতার (পিপিপি) ভিত্তিতে।
কিন্তু মধ্যবিত্তরা কেন সবসময় সর্বস্বান্ত হয়ে যায়, কি এমন বিষয় তারা সবসময় ভুল করে বসে ।আর কেনই বা তারা এমন ডিসিশন নেয় যার জন্য কিনা পড়ে পস্তাতে হয়?
১. ভুল জমি বা ফ্লাট কেনা।
দেশে অসংখ্য রিয়েল এস্টেট কোম্পানি আছে, এরা বরশি ফেলে বসে আছে টোপ গেলার জন্য এবং এ টোপ হচ্ছে মধ্যবিত্ত। কেনার সময় আপনাকে যে জমি দেখানো হয়েছে আসলে তা হয়তো কেনাই হয়নি। জমির মালিককে মাসে দুহাজার টাকা ভাড়া দিয়ে জমির উপর কোম্পানিটি সাইনবোর্ড লাগিয়েছে মাত্র।
এ জমি কিনলেন তো বুড়িগঙ্গায় কষ্টের টাকা বিসর্জন দিলেন। সর্বস্ব হারানো মানুষটির এসব মাফিয়াদের বিরুদ্ধে কিছুই করার থাকে না। আশেপাশে তাকালেই এদের হাতে পথের ফকির হওয়া অনেককেই দেখবেন।
উল্টাপাল্টা ডেভেলপার থেকে ফ্লাট কিনলেও একই দশা অপেক্ষা করছে।
একটি ভুল জমি বা ফ্লাট ইকুয়াল টু বাকি জীবনের কান্না।
২. অস্বাভাবিক ডিসকাউন্ট দেওয়া কোম্পানি।
এরা পঞ্চাশ হাজার টাকার জিনিস দশ হাজার টাকায় অফার করবে। কমদাম দেখে মধ্যবিত্ত যরা তারা ঝাঁপ দেবেন। এর মধ্যে সামান্য কয়েকজনকে পণ্য সরবরাহ করা হবে, বাকি অসংখ্য অর্ডারকারিকে দেবে না, সোজা কথায় তাঁদের টাকা মেরে দেওয়া হবে। বঞ্চিতরা এ কোম্পানির মালিককে জীবনেও ধরতে পারবেন না। কারণ তাঁদের টাকায় সে টাউট ইতোমধ্যে শত কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে, গড়ে তুলেছে মাস্তান বাহিনী, চড়ে বুলেট প্রুফ গাড়িতে, বাস করে দূর্গে। ক্ষমতাহীন মধ্যবিত্ত দের সাধ্য নেই তাকে ধরার।
৩. ক্রেডিট কার্ড।
নগদ টাকা বের হয়ে যাওয়ার সময় যেমন মন খচখচ করে করে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনার সময় তা করে না। তাই সব কিছু কিনে ফেলতে ইচ্ছে করে। একবারও মনে আসে না যে, ক্রেডিট কার্ড কোম্পানি প্রায় ত্রিশ পার্সেন্ট সুদ আরোপ করবে। মানে ১০০ টাকার জিনিস আসলে আপনি কিনছেন ১৩০ টাকায়। এটি এমন একটি গর্ত, যেখানে ঢুকা যায়, কিন্তু বের হতে জান বেরিয়ে যায়। মিনিমাম পেমেন্টের গাড্ডায় পড়লে তো জান যাবে কিন্তু ওই গর্ত থেকে বেরুতে পারবেন না।
৪. শেয়ার বাজার।
এটি এমন একটি সুড়ঙ্গ যার ওপর পারে অপেক্ষা করছে অভিজ্ঞ খেলোয়ারেরা। ভালোভাবে এ বাজার না বুঝে সে সুড়ঙ্গে টাকা ঢুকালেন তো অপর প্রান্তে অপেক্ষামান ফিল্ডাররা ক্রিকেট বলের মতো তা খপ করে লুফে নেবে। তার মানে আপনি আউট! পারমানেন্ট আউট। জীবনেও আর খেলার সুযোগ পাবেন না। এরকম আউট হওয়া হতভাগ্য খেলোয়ার আশেপাশেই দেখতে পাবেন।
৫. অতিরিক্ত মুনাফার লোভ।
যখন কোনো প্রতিষ্ঠান বাজারে প্রচলিত বা সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ মুনাফা বা সুদের চাইতে বেশি অফার করে তখনই সে প্রতিষ্ঠানে লাল পতাকা কল্পনা করবেন। মানে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি লালবাতি জ্বালিয়ে ভাগবে, তার টিকিটার খোঁজও আপনি পাবেন না। এরা তো জ্বীন-ভূত না যে বাজারের প্রতিষ্ঠিত অতি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানের চাইতে বেশি মুনাফা দেবে! এটা কি সম্ভব? এদের হাতে কি আলাদীনের চেরাগ আছে? না নেই। তবে আপনার আমানতের টাকায় এ চেরাগ তারা নিজেদের জন্য তৈরি করছে। যেদিন চেরাগটি পুরোপরি জ্বলবে সেদিন আপনার টাকা বস্তায় ভরে ম্যাজিক কার্পেটে চড়ে এরা গায়েব হয়ে যাবে।
কার্পেট রেডি, কেবল উড়াল দেওয়ার অপেক্ষা।
৬. ব্যাবসা করার জন্য অন্যকে টাকা দেওয়া।
আমি এমন মানুষ খুব কম দেখেছি যারা অন্যকে ব্যাবসা করার জন্য টাকা দিয়ে সব হারাননি। দুটো কারণে এটা হয়। প্রথমত যিনি ব্যবসার জন্য টাকা নিয়েছেন তিনি নিজেই মার খেয়েছেন, ফেরত কোত্থেকে দেবেন? দুই নম্বর হলো টাকা মেরে দেওয়া। কয়েকমাস লাভ দিয়ে তারপর অস্বীকার! লাভ তো দূরের কথা আসলই ফেরত পাওয়া যায় না। তাই ব্যাবসা যদি নিজে বুঝেন তাহলে করবেন, না বুঝে লাভের আশায় অন্যকে টাকা দিলেন মানে ব্যাংকের চেক কাটলেন না, নিজের ভাগ্যকেই নিজে কেটে দিলেন। দুনিয়ার কোনো সার্জনের সাধ্য নেই তা জোড়া লাগানোর।
৭. অন্ধ প্রতিযোগিতা।
আমাদের একটা বাজে অভ্যাস হলো অন্যদের সাথে অন্ধ প্রতিযোগিতা। পাশের বাসায় ৪২ ইঞ্চি টিভি কেনা হয়েছে! আমারও কিনতে হবে। কেউ গাড়ি কিনেছে! ধারকর্জ করে আমাকেও কিনতে হবে। ফলাফল হচ্ছে, পায়ের নিচের মাটি সরে যাওয়া। এ ইঁদুর দৌড়ের কারণে যখন জীবনে ঘোর বর্ষা নামবে তখন হাতে ছাতা থাকবে না। ফালতু প্রতিযোগিতার কারণে সে ছাতা তো কবেই বিক্রি করে দিয়েছি!
তাহলে কী করবেন?
উত্তর: উপরের কোনোটিই করবেন না। টাকাও নিরাপদ থাকবে, আপনিও নিরাপদ থাকবেন। হাতের ছাতা হাতেই থাকুক, বর্ষাকালের জন্য।
by Md Kawsar Munna | Jun 8, 2021 | Knowledge
বীন বাজালে সিনেমায় সাপ নাচে?
বাস্তবে নাচে না। সাপের কান নাই। শোনার জন্য ঘনঘন জিহ্বা বের করতে হয়।
সাপ আপনাকে আক্রমণ করবে না। আপনি যদি শব্দ করে হাঁটেন, সে বুঝতে পারে। সাপের বুকের তলায় খোলসের রঙ আলাদা। সেখানে বিশেষ স্নায়ুতন্তু থাকে। মাটির কম্পন বুঝতে পারে। আপনি কতদূরে আছেন, আপনি সাইজে কতবড়, সে বুঝতে পারে। পালিয়ে যায়।
বেলি, হাসনাহেনার গন্ধে কখনো সাপ আসে ?
উত্তর হলো না। কেউ কেউ জীবদ্দশায় বেলি, হাসনাহেনা গন্ধরাজের তলায় সাপ দেখেছেন হয়তো। মনে রাখবেন, সাপের ঘ্রাণশক্তি খুবই দূর্বল। সে গন্ধ পায় না। সুগন্ধি ফুলে পোকামাকড় আকৃষ্ট হয় বেশি। পোকা খেতে ব্যাঙ আসে। ব্যাঙ খেতে মাঝে মাঝে সাপ আসতে পারে।
খাবার পর মানুষের মত সাপও ক্লান্ত হয়। মানুষ খাবারের পর যেমন আয়েশ করে ঘুমায় তেমনই সাপও বেলি-হাস্নাহেনার তলায় ঘুমুতে পারে। তবে এসব গাছ যদি বাড়ির ভেতর থাকে তবে সাপ কম আসে। কারণ মানুষের উপস্থিতি তারা ভয় পায়। তবে বাড়ির সাইডে, ঝোপঝাড়ে এমন গাছ থাকলে সাপ আসা স্বাভাবিক।
একটা সাপকে মারলে তার জোড়া সঙ্গী আমাকে খুঁজে দংশন করতে আসবে?
একটা সাপকে মারলে তার জোড়া সঙ্গী কখনোই আপনাকে খুঁজে দংশন করতে আসবে না। সাপের স্মৃতিশক্তি খুবই দূর্বল। সাপ বাংলা সিনেমার স্বর্পরাজ শাকিব খান কিংবা নাগিন মুনমুন নয় যে সঙ্গীহারার প্রতিশোধ নিতে ছুটে আসবে। সাপ নিম্নজাতের প্রাণি। এদের মধ্যে রিভেঞ্জ বলে কিছু নাই। কিন্তু একটা সাপ মারার পর আরেকটা সাপ প্রায়ই একই স্থানে দেখা যায়, কারণ কী?
সিম্পল। মেটিং এর সময় তাদের পার্টনার আশেপাশে থাকতেই পারে কিংবা আশেপাশে গর্ত থাকলে তার বাচ্চাকাচ্চা কিংবা আরো সাপ উঠে আসতেই পারে। সে প্রতিশোধ নিতে আসেনি বরং ভুল করে গর্ত থেকে চলে এসেছে।
ছোট সাপের বিষ নাই কথাটা ভুল। সাপের বাচ্চাও সাপ।
কেঁচোর সমান একটা কেউটের কামড়ে আমার চোখের সামনে এক রোগীকে টানা ২৪ ঘণ্টা জীবনের সাথে ফাইট করতে হয়েছে। আইসিইউতে আমরা তিন ডাক্তার তার পাশে ২৪ ঘন্টা লড়েছিলাম। আর্টিফিশিয়াল ভেন্টিলেশন থেকে শুরু করে একাধিকবার অ্যান্টি-ভেনম দিয়েছি। সে সুস্থ হয়ে বাড়িতে গেছে। যাবার আগে আমাদের গালিগালাজ করে গেছে। আমরা নাকি তাকে অনেক দামী ঔষুধ দিয়েছি।
সে জানে না, একডোজ অ্যান্টিভেনমের দাম ১০ হাজার টাকা। লজিক্যালি লোকটার দোষ নেই। সে ছিল জেলে। দিনে হয়তো এক দেড়শ টাকা তার ইনকাম। রাতে যারা বাজার থেকে অন্ধকারে ঘরে ফেরে তাদের এবং জেলেদের সাপ বেশি কাটে। জেলেরা বর্ষায় রাতে আইল বরশি ফেলে, জাল ফেলে মাছ ধরে। নদী বা নালায় মাঝ ধরে। সাপ শুকনো ভেবে সেখানে থাকে। কামড় দেয়।
সাপের খাবার কি তারা কি খায়?
সিনেমা বলে, সাপ দুধ খায়। গরুর দুধ খেতে গোলাঘরে হানা দেয়। ভুল কথা। এসব সাপ ক্ষেতের ব্যাঙ-পোকামাকড় খায়। কালো রঙ্গের দাড়াশ সাপ দেখি, এরা আমাদের উপকার করে। ফসল বাঁচায়। এদের না মারা উত্তম।
সাপে কাটলে ব্লেড দিয়ে কেটে দিলে বিষ বের হয়ে যায় কথাটা ভুল। ভুলেও এই কাজ করবেন না। ব্লেড দিয়ে কাটলেন তো বিষকে রক্তের সাথে নিজহাতে মিশিয়ে দিলেন।
দংশন করা সাপকে উল্টোকামড় দিলে বিষ ফেরত চলে যায়?
দংশন করা সাপকে উল্টোকামড় দিলে বিষ ফেরত চলে যায় সাপের ভেতরে কথাটা ভুল। পায়ে সাপে কাটলে বিষ সেখানে। আপনার মুখের দাঁতে তো বিষ নাই। কীভাবে ফেরত দিবেন? সাপের বিষ তার দাঁতে থাকে না। সে যখন কামড় দেয় তার মুখের পেশিগুলো টানটান হয়ে যায়। দাঁতের কাছেই থাকে বিষধর। সেখান থেকে বিষ দাঁত বেয়ে আপনার শরীরে প্রবেশ করে।
শক্ত করে বাঁধলে বিষ ছড়াতে পারে না এমন ধারনা ভুলে যান। আপনি নিজেও নিশ্চিত না সাপটা বিষধর ছিল কি না, তাহলে শক্ত করে বাঁধবেন কেন? অনেক ডাক্তার সাপে কাটার পর বাঁধতে নিষেধও করেন। কারণ এতে হিতে বিপরীত হয়।
ফুটবলের অ্যাংলেট পায়ে দিলে যেমন আটসাট হয়ে থাকে এমন ভাবে গামছা বা শার্ট বা শাড়ি দিয়ে দংশনের কিছু উপরে পেঁচিয়ে নিতে পারেন।
বাঁধন অবশ্যই ঢিলা রাখবেন। দুট আঙ্গুল ঢোকে এমনভাবে ঢিলা করবেন। আবার খুব ঢিলাও না। ২০ মিনিট পরপর খুলে আবার লাগাতে পারেন। ভুলেও লোহার তার, সুতলি, কারেন্টের তার বা অন্য সরু জিনিস দিয়ে বাঁধবেন না। বাঁধলে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে হাতে-পায়ে পঁচন শুরু হবে। চিরতরে হাত বা পা খোয়ানোর সম্ভাবনা প্রবল। হয়তো আপনাকে বিষধর সাপ কাটেই নি অথচ আপনি ভয়ে গিট্টু দিয়ে হাত পা পঁচিয়ে পঙ্গু হয়ে গেলেন। কেমন হবে?
সাপ কাটলে কিন্তু আংটি, চুড়ি, ব্রেসলেট খুলে ফেলবেন। কিছু সাপের বিষে আপনার আঙ্গুল, হাত বা পা ফুলে যেতে পারে। আংটি বা চুড়ি থাকলে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে পঁচন ঘটতে পারে।
১। যদি ভুলে আপনার মুখোমুখি হয় সে পালাতে চেষ্টা করে। কিন্তু সে নিজে ভয় পেলে হিংস্র হয়। সব প্রাণিই এমন। মুরগীও মাঝেমাঝে মানুষকে ঠোকর দেয়। সামনে সাপ পড়লে তাকে চলে যেতে দিন।
২। বর্ষাকাল মানেই হাসপাতালে সাপে কাটা রোগী। বর্ষায় গর্তে পানি উঠে যায়। ফলে সাপ ডাঙ্গায়, শুকনো জায়গায় উঠে আসে। সেটা ক্ষেতের আইল, রাস্তা কিংবা আপনার ঘরের তোশকের তলা, বালিশের তলা, আলনার ভেতর, কাঠের স্তুপ যেকোন জায়গাতেই আসতে পারে।
৩। অন্ধকারে সাপের শরীরে পা পড়লে। জঙ্গলায় ভুলে তার শরীরে পা পড়লে কামড় দেয়।
৪। ইদুরের গর্তে সাপ থাকলে সেখানে পা রাখলে বা বসে থাকলে কামড় দিতে পারে। বাচ্চা ছেলেরা মাঝেমাঝে বসে গর্তের মুখে প্রস্রাব করে। সন্তানকে শিক্ষা দিন। এই কাজ যেন না করে।
সব সাপ বিষাক্ত? বাংলাদেশে ৮০ ধরণের সাপ আছে। মাত্র ২৭ টা বিষাক্ত। অধিকাংশই সামুদ্রিক। মাত্র ৫/৬ প্রজাতি স্থলে আছে যারা বিষধর। আপনার চোখের সামনে নিয়মিত যাদের ঘোরাফেরা দেখেন, তারা বিষাক্ত নয়। পানির সাপ অধিকাংশই বিষাক্ত নয়। তবে সামুদ্রিক সাপ সবাই বিষাক্ত। যদি চেনেন তবে বলি গোখরা, কালকেউটে, শঙ্খচূড়, চন্দ্রবোড়া বিষাক্ত।
সাপে কাটলে বুঝবেন কীভাবে? দংশন করেছে এমন মনে হবার পর যদি সরাসরি সাপ দেখেন, তাহলে ভাবতে পারেন সে আপনাকে দংশন করেছে।
একবার এক ছেলে হাসপাতালে আসল। মাটির ঘরে অন্ধকারে হেলান দিয়ে ছিল। পীঠে সাপ কেটেছে। সারাদিন হাসপাতালে আমাদের অবজারভেশনে ছিল। রাতে রিলিজের আগে খবর আসল, যেখানে হেলান দিয়ে ছিল, সেখানে কে যেন তারকাটা পুতে রেখেছিল। পীঠে লেগে তারকাটা দেয়ালে ঢুকে যায়।
খোচা লাগাকে সাপে কাটা ভেবে সে হাসপাতালে আসে। ২৪ ঘণ্টা ভয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে ঘরে ফেরে সুস্থ অবস্থায়।
বিষাক্ত সাপে কাটলে বোঝা বেশ সহজ।
১। শিকারি পশুর মত সাপের দুটো দাঁত বড় থাকে। বাঁকানো। দংশন করলে গভীর ক্ষত হয়। দুঁটো দাঁতের অস্তিত্ব থাকলে ধরে নিতে পারেন, আপনাকে বিষাক্ত সাপ দংশন করেছে।
২। যদি অনেকগুলো দাঁত থাকে, সেখানে মাংস তুলে নিলেও ভেবে নিতে পারেন এটা ছাগলের মত। অনেক দাঁত কিন্তু বিষদাঁত নাই। আপনার কিছু হবে না।
৩। সাপের বিষ কয়েক ধরণের। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে নিউরোটক্সিন রিলিজ করা সাপের কামড়ে। এক্ষেত্রে ঝিমঝিম লাগবে। চোখে ঝাঁপসা দেখবে। চোখের উপরের পাতা নেমে চোখ অংশিক বন্ধ হয়ে যাবে। মাথা ঝুলে যাবে। জিহ্বা ও শ্বাসনালী ফুলে যাবে। শ্বাস নিতে পারবে না। মুখে লালা ঝরবে। দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না। বমি করতে পারে।
চন্দ্রবোড়া কামড় দিলে লোহিত রক্তকনিকা ভেঙ্গে যায়। ফলে রক্তবমি, রক্তপায়খানা হতে পারে। কামরের জায়গায় রক্ত ঝরতে পারে। ফুলে যেতে পারে, লাল হতে পারে। ফোস্কা পড়তে পারে। কালোও হতে পারে। কিছু সাপের কামড়ে হার্ট অ্যাটাক হয়ে মারাও যেতে পারে।
মাঝেমাঝে নির্বিষ সাপ কামড়েও মানুষ মারা যায়।কেন জানেন?
ভয় পেয়ে হার্ট অ্যাটাক করে।
সাপের কামড়ে সিনেমায় গড়াগড়ি দেখেন, বিষের কারণে চেঁচামেচি দেখেন। এগুলো অভিনয়। সাপের বিষ নিয়ে একটা প্রবাদ আছে, কেমন ব্যাথা বুঝিবে সে কীসে, কভু আশীবিষে দংশেনি যারে… এইসব ভুলে যান। সাপে কাটা মানুষ খুব স্বাভাবিক থাকে শুরুতে। কোন ব্যাথা নাও থাকতে পারে। এমনকী মৃত্যু ঘটার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত কোন ব্যাথা নাও বুঝতে পারে।
একদম ঘাবড়াবেন না। বেশি ঘাবড়ালেই বিষ বেশি ছড়াবে।
সাপেকাটা জায়গা ধুয়ে ফেলুন সাবান দিয়ে। কাটবেন না ব্লেডে।
চুষে রক্ত বের করবেন, এমন চিন্তা ভুলে যান। যেখানে কামড়াবে সেখানকার নাড়াচাড়া বন্ধ। হাতে কামড়ালে হাত নাড়ালে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে যায়। হাত একদম নাড়াবেন না। পায়ে কামড়ালে হাঁটবেন না। সাপেকাটা স্থানে ভুলেও অ্যাসিড ঢালবেন না। মরিচের গুড়ো দিবেন না। কার্বলিক অ্যাসিডে ঝলসাবেন না। কোন ফলের বীজ, সর্পরাজ তেল, গুটি, আটি, বড়ি, তাবিজ কিছুই লাগাবেন না।
সাপটাকে পারলে চিনে রাখুন। ডাক্তারকে বললে চিকিৎসা পেতে সুবিধা হবে। তবে ধররতে যাবেন না। মেরেও ফেলার দরকার নাই।
মৃত সাপকে ধরতে যাওয়াও নিরাপদ নয়। এরা মৃত্যুর ভান করে শুয়ে থাকতে পারে।
জীবিত ধরে ওঝার কাছে যাবেন, এমন চিন্তা থাকলেও ঝেড়ে ফেলুন। ওঝা সাপের বিষ নামাতে পারে না। ওঝারা অনেক রোগী ভালো করে। যেগুলো আসলেই বিষাক্ত সাপের কামড় ছিল না। বিষাক্ত হলে একটা সময় বুঝতে পারে তখন নানা অজুহাত নাগ-নাগিনির কথা বলে এরা হাসপাতালে রোগী রেফার করে। আমরা হাসপাতালে অনেক পাই যারা একেবারে শেষ মুহুর্তে আসে। ওঝার কাছে গিয়ে জীবন খুইয়ে ফেলার পরিস্থিতি তৈরি করে আসে।
বিষাক্ত সাপে কাটলে আপনি বাঁচতে পারেন একটামাত্র পথ অনুসরণ করলে। সেটা হল – দুনিয়ার কারো মতামত নিবেন না। সরাসরি হাসপাতাল যাবেন।
সাপে কাটলে এক সেকেন্ড সময় নষ্ট না করে সরকারি বড় হাসপাতালে যান। রাসেল ভাইপার বাদে সব সাপেরই বিষের অ্যান্টিভেনম আছে। ২৪ ঘন্টার মধ্যেই চিকিৎসা শেষে ফিরে আসবেন। [রাসেল ভাইপার বাংলাদেশে বিলুপ্ত সাপ। তবে রাজশাহীতে কয়েকবার নতুন করে পাওয়া গেছে। ফরিদপুরে পাওয়া গেছে কিছুদিন আগে। বন্যার জল-স্রোতে এরা আবার ছড়িয়ে পড়তে পারে দেশময়]
যদি বুঝে ফেলেন, সাপটা বিষধর নয়, তাহলে কী করবেন?
তবুও হাসপাতালে যাবেন। ভর্তি হয়ে প্রয়োজনে বিছানায় ২৪ ঘন্টা বসে থাকবেন। তবুও হাসপাতালে যাবেন।
[নোটঃ অধিকাংশ সাপই নির্বিষ। সাপ মারবেন না। সাপ বাস্তুতন্ত্রের অংশ। ঘরে সাপ পাওয়া গেলে স্নেক রেস্কিউয়ারকে জানাতে পারেন। ওঝাদের জানিয়ে পরিবেশ থেকে এসব সাপ বিলুপ্ত করবেন না।
ওঝারা সাপ মেরে পুড়িয়ে তেল বানায়। সেই তেল বাত-ব্যাথা-সাপের বিষ নামানো-হারানো যৌবন পুনরুত্থান নামক নানাকিসিমের মিথ্যা চিকিৎসায় ব্যবহার করে। তাদের এই কাজ করতে দিবেন না। কারণ দিনশেষে সেই সাপের তেল হয়তো আপনার আত্মীয়ই কিনে নিয়ে ব্যবহার করছে]
কার্বলিক অ্যাসিডে সাপ পালায়? সাপের ঘ্রাণ শক্তিই এত দূর্বল যে ফুলের গন্ধেও আসে না, তাহলে কার্বলিকে সাপ পালাবে কে বলল আপনাকে? এসব সেইফটি এককালে প্রচলিত ছিল। এখন ব্যর্থ টোটকা।
বাড়িতে খড়ের গাদা, লাকড়ির স্তুপ থাকলে আপনার মা বা স্ত্রীকে সতর্ক করে দিন। খড় বা লাকড়ি নেবার আগে সেখানে লাঠি দিয়ে কিছুক্ষণ শব্দ করুন। সাপ থাকলে চলে যাবে। রাতে বিছানা এমনকী বালিশের তলাও চেক করবেন। আলনার ভেতরে থাকতে পারে। শব্দ করে কাপড় নিতে যাবেন। বাড়ির আশেপাশে ঝোপঝাড় থাকলে কেটে ফেলুন। ঈদুরের গর্ত থাকলে ভরাট করে ফেলুন।
বর্ষাকাল এসেছে। এখন সাপ আপনার বাড়িতে-ঘরে আশ্রয় নিতে আসতেই পারে। সাবধান থাকুন। অন্যদের সতর্ক করে রাখুন। গ্রামের আপন মানুষদের (বাবা-মা, বউ-বাচ্চা-বন্ধু) সাপের ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়ে রাখুন। সতর্ক থাকবেন-ভয় পাবেন না-অবহেলা করবেন না।
© ডা. রাজীব হোসাইন সরকার
আমাদের ভিডিওগুলো দেখতে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ঘুড়ে আসতে পারেন
এখানে ক্লিক করে by Md Kawsar Munna | Jun 2, 2021 | Technology
I have understood one thing very well because of studying data science. That is most people have no idea about Data Science, Statistics. Extracting results from data does not work, you must also understand what the data actually indicates. Understand that relationship and connection are not the same things.
Data science is the best job of the 21st century. Its demand is increasing day by day. It plays a huge role in the performance of almost all kinds of organizations.
Currently, a lot of data or information is being produced. If you give a like on Facebook, it is considered data. Important information can be extracted from such a large number of data. Many tasks can be done using the data. This is the basic foundation of data science. Finding the required information and applying it.
A section of data science is data analytics. Suppose a company’s annual sales data. From here you can find out which product has been sold the most, at what time it has been sold more, and where it has been sold more. To do this, you can use a bar chart, You can display that information in the graph, scatter plot, box plot, etc. This is the work of data analytics. I hope I have given you some idea.
Another important part of data science is machine learning. It is the foundation of modern artificial intelligence. If you want to teach a computer something, you need to show it data. From that data, machine learning algorithms search for patterns and make important decisions. Like you Want to make a program that can distinguish a picture of a cat or a dog.
Then your program needs to display a lot of pictures of dogs and cats. From there, the machine learning algorithm can distinguish the cat from the dog by observing the eyes, nose, mouth, etc. in the picture. Finally, you need to test how well your machine can make correct decisions. If it’s not correct you need to re-enter more data or use another algorithm.
Today, almost everything on the Internet runs on data science. YouTube gives you new video recommendations based on your video viewing patterns on YouTube. They recommend new products based on what you have previously bought or visited on Amazon or Daraz.
Currently, data science is also being used for patient identification in hospitals. And there is news of robots, automatic cars, etc. It goes without saying that a large number of data scientists are working behind these. The demand for this is constantly increasing and new dimensions are constantly being added to this field.
Co-relation:
Correlation is simply how one factor is related to another factor. And causation is finding out what is the cause.
For example, the year there is a flood, the crop will be bad. It is a correlation. But it cannot be asserted that the crop will be bad because of a flood. Many other things have to be kept in mind.
He thinks that crime is more in summer in Bangladesh. In summer, people eat more ice cream. So I found a relationship between ice cream and crime. Now if I say that eating ice cream increases crime, will that be correct? no, Because if there is a co-relation it will not be the cause. Goats figure out this type of connection.
Journalists are a special animal in Bangladesh. Their job is always to make news with sensational material. But I have to keep in mind whether the news I want to report is correct or not, whether the common people understand it. I also need to understand the impact of my news. Such a sensitive topic has to be handled very carefully. It is not done in our country.
Think online paper news original “Griezmann spat in Neymar’s face.”
Inside, the real news is Griezmann spitting north. And at that time Neymar was standing 1000 km away to the north. So “technically” in the words of the online paper, this spit is going in Neymar’s mouth.
This is the news that educated girls are at the top of divorce. If you go to the comments of all this news, you will see that everyone is coming to use their knowledge.
“What is the need for girls to study?”
“Educated girls are the root of society’s destruction.”
“These girls don’t count husbands when they start earning their own.”
I left the dirty comments.
The fact is that these girls are giving divorced, why? The reason for divorce is not that they are educated and independent.
The reason for divorce may be that the husband tortures, may not take care of the family, and may not be able to manage. There are a thousand reasons. But I can guarantee that “educated” and “independent” girls are not the reason for divorce.
If the girls are educated, if they have their own income then it is difficult to torture that girl. It is wrong to think that the girl will keep her mouth shut even if tortured. If a girl doesn’t study and doesn’t have her own source of income, then that girl silently endures all the torture. Because he has nowhere to go. And this is what Bangladeshi society wants.
Main author: Tabib Ibne Mazhar
by Md Kawsar Munna | Jun 2, 2021 | History
উনবিংশ শতাব্দী এর অপারেশন থিয়েটার গুলোর পরিবেশ হতো নোংরা, অবর্ণনীয় যন্ত্রণায় কাতর রোগীদের কান্না চিৎকার চেঁচামেচিতে-পূর্ণ ভয়াবহ ব্যাপার ছিল, তখন অনুভূতিনাশকের ব্যবহার হয়নি।
চেতনানাশক না থাকার কারণে উনবিংশ শতাব্দী তে অস্ত্রোপচারে দক্ষতার চেয়ে দ্রুততা বেশি গুরুত্ব পেত। কোন সার্জন কত দ্রুত অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করতে পারত, তার উপর ভিত্তি করে তার সাফল্য এবং সুনাম ছড়িয়ে পড়ত।
ফলে এমন অনেক সার্জন সে সময় খ্যাতি অর্জন করেছিলেন, যাদের আসলে কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতাও ছিল না। এরকম একজন বিখ্যাত অস্ত্রোপচারকারী ছিলেন রবার্ট লিস্টন, যিনি মাত্র ৩০ সেকেন্ডে আহত রোগীর পা কেটে ফেলার ব্যাপারে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন!
এক কুখ্যাত অপারেশনের সময় তিনি এত দ্রুত রোগীর শরীরের অঙ্গচ্ছেদ করছিলেন যে, বেখেয়ালে হাতের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার এক সহকারীর হাতের আঙ্গুল কেটে গিয়েছিল এবং একজন দর্শকের কোট ফেঁড়ে গিয়েছিল।
কথিত আছে, দর্শকটি ভয়েই মৃত্যুবরণ করেছিল, অন্যদিকে রোগী এবং সহকারীর গ্যাংগ্রীন ইনফেকশন হয়ে গিয়েছিল!
আরেক রোগী মূত্রাশয়ের পাথর অপসারণ করাতে লিস্টনের কাছে এসে অপরাশেন থিয়েটারের পরিবেশ এবং লিস্টারের ক্ষিপ্রতা দেখে ভীত হয়ে বাথরুমে ঢুকে দরজা আটকে দিয়েছিল। ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার বিশালদেহী লিস্টন বাথরুমের দরজা ভেঙে তাকে বের করে এনেছিলেন এবং বিছানার সাথে তাকে বেঁধে এরপর অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছিলেন।
উনবিংশ শতাব্দী তে চিকিৎসকদের আণুবীক্ষণিক জীবাণু এবং তাদের সংক্রমণ প্রণালী সম্পর্কে কোনো পরিষ্কার ধারণা ছিল না। চোখে দেখা যায় না, এরকম অনুজীবের কারণেও যে রোগীর মৃত্যু ঘটতে পারে, তার সাথে চিকিৎসকরা পরিচিত ছিলেন না। ফলে হাসপাতাল কক্ষগুলোতে রোগীদের আশেপাশেই পোকামাকড় এবং কীটপতঙ্গ ঘুরে বেড়াত। কিছু কিছু হাসপাতাল অবশ্য পোকামাকড় নির্মূল করার জন্য কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছিল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই কর্মচারীদের বেতন ছিল সার্জনদের চেয়েও বেশি!
সেই যুগে চিকিৎসকদের পরনে থাকত রক্তমাখা অ্যাপ্রন। অ্যাপ্রন পরিবর্তন তো দূরের কথা, তারা পরপর একাধিক অস্ত্রপচারের মাঝের সময়ে নিজেদের রক্তমাখা হাতও পরিষ্কার করতেন না। একই ছুরি-কাঁচি দিয়ে একের পর এক অস্ত্রপচার করে যেতেন। তাদের ধারণা ছিল, পরিষ্কার করার পরে তো আবারও রক্ত লাগবে, তাহলে পরিষ্কার করে কী লাভ! অ্যাপ্রনের রক্ত পরিষ্কার না করার আরেকটি কারণ ছিল, যার অ্যাপ্রনে যত বেশি রক্ত থাকত, তাকে তত চাহিদাসম্পন্ন সার্জন হিসেবে দেখা হতো।
অধিকাংশ রোগীই রক্তের অভাবে অথবা অস্ত্রোপচার পরবর্তী ইনফেকশনের কারণে মৃত্যুবরণ করত। অস্ত্রপচারের পরে রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা এত কম ছিল যে, হাসপাতালগুলো প্রায়ই রোগীদেরকে অগ্রীম টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য করত। লন্ডনের কিছু কিছু হাসপাতালে সে সময় অপারেশন পরবর্তী মৃত্যুর হার ছিল ৮০ শতাংশের চেয়েও বেশি।
সেই যুগে অস্ত্রপচার ছিল একইসাথে দর্শনীয় একটি ব্যাপার। অনেকেই সে সময়ের চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি সম্পর্কে উৎসাহের কারণে অস্ত্রোপচারগুলো স্বচক্ষে দেখার জন্য হাসপাতালে যেত। তবে এছাড়াও টেলিভিশন এবং সিনেমা আবিষ্কার হওয়ার পূর্বে সে সময় অনেকেই জীবন-মৃত্যুর মধ্যকার সংগ্রাম উপভোগ করার জন্য হাসপাতালগুলোতে ভিড় জমাত। কিছু কিছু হাসপাতালে টিকেট কেটে অপারেশন দেখানোর বন্দোবস্তও ছিল।
চেতনানাশক না থাকায় রোগীদেরকে সে সময় অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করতে হতো। ফিটজহ্যারিস তার গবেষণায় দেখতে পান, শুধু রোগীরা না, তাদের কষ্ট এবং আর্তনাদ দেখে অনেক সময় সার্জনরাও ভেঙ্গে পড়তেন এবং কাঁদতে শুরু করতেন।
১৮৪০ সালে এরকম অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে যাওয়া এক মহিলা তার মেয়ের কাছে লেখা একটি চিঠিতে অপারেশনটিকে মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, অপারেশনের পূর্বে সার্জন তার রুমে এসে তাকে ছুরি দেখিয়ে বলেছিল মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হতে।
উনবিংশ শতাব্দী এর শেষভাগে অস্ত্রোপচার প্রযুক্তি ধীরে ধীরে উন্নতি লাভ করতে শুরু করে। ১৮৪৬ সালে ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে জন কলিন্স ওয়ারেন সর্বপ্রথম ইথার গ্যাস ব্যবহার করে রোগীকে অনুভূতিশূণ্য করে অপারেশন পরিচালনা করেন।
ফলে সার্জনদের সামনে দ্রুত অপারেশনের পরিবর্তে ধীরে-সুস্থে ঠান্ডা মাথায় জটিল অপারেশনের পথ উন্মুক্ত হয়। কিন্তু প্রথম দিকে অনেকদিন পর্যন্ত এর কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। বরং এর ফলাফল হয়েছিল আরো ঋণাত্মক। কারণ দীর্ঘসময় ধরে অপারেশন করার অর্থ ছিল রোগ-জীবাণুগুলোকে কাটা এবং ক্ষতস্থানে বিস্তার লাভ করার জন্য আরো বেশি সময় দেওয়া।
এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটে, যখন জোসেফ লিস্টার নামে এক অল্পবয়সী সার্জন লুই পাস্তুরের ব্যাকটেরিয়ার আবিষ্কার সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করার পরে হাসপাতালে রোগীদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ হিসেবে অদৃশ্য জীবাণুর ধারণা দেন এবং বলেন যে, এই জীবাণুগুলোর কারণেই অস্ত্রোপচার সফল হওয়ার পরেও অনেক রোগীই শেষ পর্যন্ত ইনফেকশন হয়ে মারা যাচ্ছে।
জীবাণু প্রতিরোধের জন্য তিনি বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন এবং সর্বপ্রথম কার্বলিক এসিডের মাধ্যমে ক্ষতস্থান এবং ছুরি-কাঁচি পরিষ্কার করে জীবাণু দূর করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন।
১৮৬৫ সালে তিনি সর্বপ্রথম জীবাণুনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে অস্ত্রোপচার পরিচালনা করেন। প্রথমদিকে অবশ্য এই অদৃশ্য জীবাণু এবং তাকে প্রতিরোধের জন্য জীবাণুনাশক হিসেবে রাসায়নিকের ব্যবহারের ধারণা মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করাতে তাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল।
কিন্তু কলিন্স এবং লিস্টারের দুটি ভিন্ন ভিন্ন আবিষ্কার শেষপর্যন্ত অস্ত্রোপচারের সফলতার হার এবং রোগীদের কষ্ট লাঘবের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখে।
– দ্য বুচারিং আর্টস, আর বাংলা।